নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর:
নওগাঁর রাণীনগরে নলকূপের পানি সেচ দিয়েই আমন ধান রোপন শুরু করেছেন কৃষকরা। ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না থাকায় আগাম জাতের ধান রোপন করতে পারছেননা কৃষকরা। ফলে ধানের চারা নিয়ে বেকায়দায় পরেছেন তারা।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মোৗসুমে উপজেলা জুরে প্রায় ১৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ধান রোপনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে বিনা-১৭,ব্রি-৯০,ব্রি-৮৭,ব্রি ৩৪,স্বর্ণা-৫,ব্রি-৪৯সহ বিভিন্ন জাতের ধান রোপন করবেন কৃষকরা। এসব ধান রোপনে ইতি মধ্যে প্রায় এক হাজার ১০০হেক্টর জমিতে বীজ বোপন করা হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, ইতি মধ্যে আগাম জাতের ধানের চারাগাছ বড় হয়ে গেছে। বীজ বোপনের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ধান রোপন করতে হয়। তাছাড়া চারা গাছের অতিরিক্ত বয়স হলে ধানের ফলন কমে যায়। কিন্তু ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি থাকায় চারার বয়স হলেও পানি অভাবে রোপন করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে চরম বেকায়দায় পরেছেন তারা। তবে ইতি মধ্যে অনেক কৃষকরা গভীর/অগভীর নলকূপ থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছেন।
কৃষকরা মনে করছেন, সেচের পানি দিয়ে ধান চাষ করলে অতিরিক্ত খরচ বারবে। এতে শুরুতেই কিছুটা লোকসানের আশংকা থাকে। তাদের মতে,গত বোরো মৌসুমে ধান ভাল হলেও অধিক ঝড়-বৃষ্টির কারনে অনেক কৃষক পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেননি। ফলে ব্যপক লোকসানে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ঠদের মতে,গত বোরো মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টির প্রভাবে পাকা ধান নুয়ে পরে পানির নিচে পঁচে গেছে। ফলে চরমভাবে ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এতে শুধুমাত্র ধানের ফলন বিপর্যয়েই প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কৃষকের। এসব লোকসান কেটে ওঠতে কৃষকরা আগাম চারা বোপন করলেও পানির অভাবে ধান রোপন করতে পারছেননা।
রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা বলেন,গত বোরো মৌসুমে ৬২ বিঘা জমিতে ধান রোপন করে প্রায় ৪লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। প্রচন্ড খড়া ওপেক্ষা করে লোকসান কেটে ওঠতে বাধ্য হয়ে নলকূপের পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছেন। ঝিনা গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন,গত আমন মৌসুমে বিনা-১৭জাতের আগাম ধান এলাকায় ব্যপক সারা ফেলেছে। আগাম জাতের এই ধানের ফলন যেমন সন্তোষজনক তেমনি অনেক আগেই ধান কেটে ওই জমিতে আলু-শরিষা আবাদ করা যায়। তাই ১২ বিঘা জমিতে ধান রোপনের জন্য চারা প্রস্তুত করেছি, কিন্তু বৃষ্টির পানি না থাকায় বাধ্য হয়ে নলকূপের পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছি।
গোনা গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন,গত আমন মৌসুমে ধানে কিছুটা লোকসান হলেও শরিষা আবাদ করে বিঘাপ্রতি প্রায় ১৫/২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। সেই আসায় এবার প্রায় ১৯ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান রোপন করছেন। কালীগ্রামের মজিবর রহমান বলেন,আগাম জাতের ধানের চারা আরো প্রায় ৮/১০দিন আগে লাগানোর উপযুক্ত হয়েছে। বৃষ্টি হবে, হচ্ছে করে বৃষ্টি হচ্ছেনা। গভীর নলকূপ চালু না করায় পানিও পাওয়া যাচ্ছেনা। সময় মতো ধান রোপন করতে না পারলে ফলন ভাল হবেনা। তাই ধানের চারা নিয়ে চরম বেকায়দায় আছি।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: শহিদুল ইসলাম বলেন,জমিতে পানি থাকলে এতোদিনে প্রায় অর্ধেক পরিমান জমিতে ধান রোপন শেষ হতো। কিন্তু পানি নাথাকায় কেবলমাত্র ২/৩শতাংশ জমিতে ধান রোপন শেষ হয়েছে। ইতি মধ্যে সবগুলো গভীর/অগভীর নলকূপ থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপনের জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে। বেশ কিছু নলকূপ থেকে পানি সেচ দিয়ে ধান রোপন শুরু করেছেন। আসা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পুরোপুরি ধান রোপন শুরু হবে।
আরও দেখুন
লালপুরে গোঁসাই আশ্রমে কমিটি
গঠন নিজস্ব প্রতিবেদক লালপুর,,,,,,,,,,,,,,,,নাটোরের লালপুরে শ্রী শ্রী ফকির চাঁদবৈষ্ণব গোঁসাই আশ্রমে আলোচনা সভা ও আহŸায়ক …