নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাাঁঃ
নওগাঁর রাণীনগরের যুবক রকমারী সবজি চাষী আনোয়ার হোসেন স্কোয়াশ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। শীত মৌসুমে অন্যান্য সবজির পাশা-পাশি স্বল্প পরিমান জমিতে পরীক্ষামূলক স্কোয়াশ চাষ করে এক দিকে যেমন সফলতা পেয়েছেন অন্যদিকে লাভবানও হয়েছে তিনি। নতুন এই সবজি চাষে চাষীরা সফল হলেও স্কোয়াশ চাষে ধারনা নেই জানালেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা।
চাষী আনোয়ার হোসেন কালীগ্রাম দীঘির পার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে ঝিঙ্গা, লাউ, মূলা, টমেটো, বাঁধা ও ফুল কপিসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করে থাকেন। এর মধ্যে ধাপের হাটে এই সবজি দেখে এসে আদমদীঘি উপজেলার একজন বীজ বিক্রেতার পরামর্শে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক স্কোয়াশের বীজ নেন। বাড়ীতে মিস্টি কুমড়া বা লাউয়ের মতো বীজ বপন করে গাছ গজিয়ে পরে জমিতে রোপন করেন। প্রায় দেড় মাস পর ফল আসতে শুরু করে । স্কোয়াশ গাছ একদম মিষ্টি কুমড়ার মতো। পাতা, ডগা, কান্ড দেখে বোঝার উপাই নেই যে এটি মিস্টি কুমড়া নাকি স্কোয়াশ গাছ। মিস্টি কুমড়া গোল হলেও স্কোয়াশ দেখতে বাঙ্গির মতো লম্বা এবং স্বাদে ও পুষ্টিতে মিস্টি কুমড়ার মতো। তবে মিস্টি কুমড়ার গাছ অনেক লম্বা হলেও স্কোয়াশের গাছ সর্বোচ্চ এক-দেড় ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই সবজি পাহাড়ী এলাকা এবং বিভিন্ন দেশে চাষ হলেও দেশের এই অঞ্চলে এটি একেবারেই নতুন বলছেন কৃষি কর্মকর্তা। স্কোয়াশ রাণীনগর উপজেলায় প্রথমবার পরীক্ষামূলক চাষ হয়েছে দু’একটি জায়গায় । উপজেলার সিম্বা গ্রামের সৌরভ খন্দকারও চাষ করেছেন স্কোয়াশ সবজি। তিনি তিন কাঠা জমিতে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এই সবজি চাষে। বাজারে এই সবজিটি নতুন হলেও এর চাহিদা থাকায় প্রতি পিস ৩০/৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । প্রতিটি স্কোয়াশ দেড় থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সবজি হিসেবে এই এলাকায় স্কোয়াশ নতুন হওয়ায় এর চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে ও স্কোয়াশ ক্ষেত দেখতে স্থানীয় অন্যান্য সবজি চাষীরা আসছেন স্কোয়াশ ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে।
আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় ৮ শতক জায়গায় পরীক্ষামূলক চাষ করেছেন এবং একমাত্র বীজ ও কিটনাশক বিক্রেতার পরামর্শে পরিচর্চা করেছেন তিনি। চাষীর তথ্য মতে, বীজ ক্রয়,জমি প্রস্তুত,লাগানো এবং সার,কিটনাশকসহ ৮শতক জমিতে মাত্র প্রায় দেড় হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এপর্যন্ত জমি থেকে প্রায় ছয় হাজার টাকার স্কোয়াশ বিক্রি করেছেন। এছাড়া এখনো প্রায় দুই আড়াই হাজার টাকার স্কোয়াশ বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান,প্রথম চাষ,তাই পরিচর্চা বুঝতে এবং খরচ একটু বেশি হয়েছে। স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি পরিমান জমিতে এই স্কোয়াশ চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, স্কোয়াশ সবজি চাষে আমাদের তেমন ধারণা নেই । এই এলাকায় যে দু’একজন চাষ করেছেন তারা সফল ও লাভবান হয়েছেন। তাদের দেখা-দেখি অনেকেই অফিসে আসছেন পরামর্শ নিতে। কিন্তু স্কোয়াশ চাষে সঠিক ধারণা না থাকায় কৃষকদের পরামর্শ দিতে পারছিনা। তার পরেও আমরা যেটুকু ধারনা নিয়েছি তা থেকে বলা যায়, স্কোয়াশ চাষ বেশ লাভজনক । আশা করছি আগামী মৌসুমে ব্যাপক আকারে স্কোয়াশ চাষ হবে।