নিউজ ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার ও তখন যারা দেশে ছিলেন এমন বয়োজ্যেষ্ঠদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রাজাকারদের নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করতে চায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এবার তালিকা প্রকাশে কোন ধরণের বিতর্ক যেন সৃষ্টি না হয় তা নিয়ে সতর্ক মন্ত্রণালয়। তবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদদের সদ্য সাবেক কমান্ডাররা তালিকা প্রকাশের আগে তাদের নির্বাচন চান।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ঢাক ঢোল পিটিয়ে রাজাকারদের একটি তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রকাশের পরপরই তুমুল বিতর্ক শুরু হয় এই তালিকা নিয়ে। কারণ বেশ কজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের নামও দেখা গেছে এই তালিকায়। সমালোচনার মুখে দুঃখ প্রকাশ করে এই তালিকা স্থগিত করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সরিয়ে নেয়া হয় মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও।
গেল ৭ ডিসেম্বর রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের তালিকা প্রকাশের বিধান যুক্ত করে আইনের খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রীসভা। আবারো আলোচনায় আসে রাজাকারের তালিকা বিষয়টি।
অবশ্য এর আগেই রাজাকারদের নির্ভুল তালিকা করতে জেলা প্রশাসকদের চিঠি পাঠায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় এবার সিদ্ধান্ত পাল্টেছে মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, রাজাকার সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধারাই ভালো জানবে। তবে এবারের তালিকা করার সময়ে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাধান্য দিয়ে এবং ওই সময়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের মতামত নিয়ে করা হবে।
এরইমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক জেলা ও উপজেলা কমান্ডারদের কাছ থেকে তালিকা প্রকাশে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডাররা স্বাগত জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তকে। তারা বলেন, রাজাকারের সম্পর্কে জানে মুক্তিযোদ্ধারা। থানা কমান্ডার, জেলা কমান্ডার এবং মহানগর কমান্ডাররা জানে কে কি ছিল। এরাই জানে রাজাকার কে, শান্তিবাহিনীর লোক কে ছিল। রাজাকারের তালিকা আমরা অনেকটাই করে ফেলেছি। আমরা চাই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হোক যাতে করে আগামি প্রজন্ম জানুক কারা এদেশকে স্বাধিণ দেখতে চায়নি।
তবে এই তালিকা প্রকাশের আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন চান মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলেন, আমাদের সদ্য সাবেক বলা হয়। এজন্যই বলছি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন আগে করা হোক। নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নেতা নির্বাচিত হবে তারাই রাজাকারের তালিকা করবে।
জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে আইনটি পাস হলে আগামী মার্চেই প্রথম তালিকা প্রকাশের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।