নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সেখানে গণসংযোগ ও পথসভায় যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন। ২১ জুন নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানাচ্ছেন জনসাধারণ।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর ১৭, ১৮ ও ১৯ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ১৯নং ওয়ার্ডের বিশ^ গোডাউন মাঠে পথসভায় হাজার হাজার নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। এরপর সেখান থেকে বারো রাস্তার মোড় পর্যন্ত মিছিল বের করা হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ও সেখানে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। এরপর আসাম কলোনী বউ বাজার, শাহ মখদুম থানার মোড়, ফুলতলার মোড় সহ বিভিন্ন মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন। বক্তৃতায় রাজশাহীর উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নৌকা মার্কাকে বিপুল ভোট দিয়ে বিজয়ী করার অনুরোধ জানান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
পথসভায় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গণসংযোগ ও পথসভায় যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও উচ্ছ্বাসের সাথে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হচ্ছেন। উন্নয়নের প্রতীক নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী ইতোমধ্যে সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য শহরের গৌরব অর্জন করেছে। রাজশাহীর প্রতি আমার ঋণ রয়েছে। আমার জন্মের এই শহরকে আরো সমৃদ্ধ, আরো উন্নত ও কর্মমুখর করতে কাজ করতে চাই। আপনারা দোয়া করবেন, যাতে এই কাজগুলো আমি করতে পারি।
সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। চারলেন সড়ক হয়েছে, সড়কে দৃষ্টিনন্দন বাতি লাগানো হয়েছে, সড়ক বিভাজকে ফুলের বাগান হয়েছে, ওয়ার্ড পর্যায়ে রাস্তা হয়েছে, ড্রেন হয়েছে। গত ৫ বছরের মধ্যে প্রায় আড়াই বছর উন্নয়মূলক কাজ করতে পারিনি। কারণ করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়েছে। এরমধ্যে আড়াই বছরে যে উন্নয়ন কাজ হয়েছে, তা দৃশ্যমান। করোনা মহামারিতে নগরবাসীকে সময় দফায় দফায় খাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। বিনামূল্যে অক্সিজেন, ওষুধ সহ সকল সেবা দেওয়া হয়েছে। মানুষের দুঃসময়ে পাশে ছিলাম, আগামীতে থাকবো।
তিনি আরো বলেন, নগরীতে উন্নয়ন হয়েছে, আরো হবে। আমি নিজের জীবন রাজশাহীর কল্যাণে বিলিয়ে দিতে চাই। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে, এবার দরকার কর্মসংস্থান। যদি মেয়র নির্বাচিত হতে পারি তবে এবার শিল্পায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে শিল্প মালিকদের রাজশাহীতে নিয়ে আসবো। যদি ১৫ থেকে ২০ টা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নিয়ে আসতে পারি তাহলে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কাজের জায়গা হবে।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, সারা শহরে দশটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হবে। সেখানে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণ-তরুণীরা ঘরে বসে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। সেই কাজের ক্ষেত্রও আমরা দেখিয়ে দেবো। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদকে কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে পরিণত করা হবে। সেখানে ছেলে-মেয়েরা কৃষির উপরে উচ্চতর পড়াশোনা করতে হবে। কৃষি প্রধান এই অঞ্চলে এটি করা দরকার। এটি করতে চাই।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়ন দেখে অনেকের গায়ে জ¦ালা ধরেছে।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরে যান। সরাসরি বাস ও ট্রেন না থাকায় যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়। আগামীতে আমি নির্বাচিত হলে ছয় মাসের মধ্যে রাজশাহী-কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন ও বাস চালু করতে চাই।
পথসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা রানা, ত্রান ও সমাজকল্যান সম্পাদক ফিরোজ কবীর সেন্টু, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ইউনুস আলী, বাদশা শেখ, মুজিবুর রহমান, শামসুন্নাহার মুক্তি, জাসদ রাজশাহী মহানগরের সভাপতি আবদুল্লাহ-আল-মাসুদ শিবলী, রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আখতারুল আলম সহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতবৃন্দ।