নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহীত……রাজশাহীতে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগর ভবনের সিটি হল সভাকক্ষে এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
সভায় রাসিক প্রশাসক মহোদয় বলেন, সারাদেশে জরাযুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বাংলাদেশে নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এইচপিভি টিকা জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এ টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। সরকার এই টিকা বিনামূল্যে প্রদান করছে। টিকা পেতে নিবন্ধন করতে হবে www.vaxepi.gov.bd. ওয়েবসাইটে।
তিনি বলেন, আজকের কিশোরী আগামী দিনের মা। তাদের সুস্বাস্থোর উপর নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে এইচপিভি টিকা সংযোজন করেছে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে যা চলবে ১৮দিন ব্যাপী। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার রুখে দিতে হবে। এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্য পরিচালিত হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।
বাল্যবিবাহ রোধ, অনিয়ন্ত্রিত যৌন সংশয় নানাবিধ ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ কার্যক্রমকে বাস্তবায়িত করতে সকলকে আন্তরিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে এ বিষয়ে এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। আপনারা আমরা সকলে মিলে এ কাজটি করতে চাই। এ্যাডভোকেসি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ আনোয়ারুল কবীর, রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক। এইচপিভি ক্যাম্পেইন বিষয়ে সার্বিক কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ, রাসিকের সচিব মোঃ মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যোবায়ের হোসেন, গণপূর্ত রাজশাহীর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ফজলুল হক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডাঃ কামরুজ্জামান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডাঃ ফারহানা হক, রাসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ সহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ইমামগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভি, পাথ এর সহযোগিতায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
পরে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে অপর কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ আনোয়ারুল কবীর, রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহীর উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস, উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা মোঃ সানাউল্লাহ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।