সোমবার , নভেম্বর ১৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / যে যেখানে আছেন সেখানেই ঈদ উদযাপন করুন : প্রধানমন্ত্রী

যে যেখানে আছেন সেখানেই ঈদ উদযাপন করুন : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কায় সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে বেঁচে থাকলে তো দেখা হবে। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছোটাছুটি না করি। যে যেখানে আছেন, সেখানেই ঈদ উদযাপন করেন।

গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও শতাধিক জলযান উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিআইডবিøউটিএ’র ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)’, বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ ‘পরিদর্শী’, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডবিøউটিসির ২টি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ ও ‘এমভি আইভি রহমান’, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৫০০ পাকা বাড়ি বিতরণ এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট মেরিন একাডেমি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্স পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে সচিবালয়ের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। সংক্রমণ ঠেকাতে যাতায়াত সীমিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই করোনাটা যাতে সারাদেশে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলা, আর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত একেবারে অতি প্রয়োজন না হলে আপনারা করবেন না। তিনি বলেন, যাতায়াত করতে গেলেই কে যে সংক্রমিত, আপনি জানেন না। কিন্তু সে যখন অন্য জায়গায় যাবে, অনেক লোককে করোনায় সংক্রমিত করবে এবং তাদের জীবন নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে। সেটা যাতে না হয়, সেজন্য আমরা এই যাতায়াত সীমিত করার পদক্ষেপ নিয়েছি। একই সঙ্গে মানুষের জীবনে যেন আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডগুলো অব্যাহত থাকে, সেটাও সীমিত আকারে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে যেন করে তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বিত্তবানদের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্‌বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিত্তশালী আছেন, তারা দুস্থদের একটু সহযোগিতা করেন। সেটা আরও বেশি সওয়াবের কাজ হবে বলে আমি মনে করি। করোনা সংকটে অসহায় মানুষের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজ কভিড-১৯ মহামারী আমাদের দেশের মানুষকে সত্যিই খুব কষ্ট দিচ্ছে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে সহযোগিতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত, অতি দরিদ্র, কর্মহীন বা দিনমজুর বা এখন যারা কাজ করতে পারছেন না, রিকশা-ভ্যান, পরিবহন শ্রমিকসহ স্বল্প আয়ের মানুষ, ইতিমধ্যে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার অসহায় মানুষের জন্য আমরা আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দিয়েছি। তাছাড়া এই রোজার মধ্যেও আমাদের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশে খাদ্য সংকট পরিস্থিতি এড়াতে কৃষির আবাদ বাড়ানোর আহ্‌বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।

সব নৌ-যানের নিবন্ধন থাকা উচিত : নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের স্বার্থে সব ধরনের নৌযানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নৌযানে যাতায়াতকারী এবং পরিচালনাকারী সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। যখনই যারা (নৌপথে) চলাচল করবেন, একটু সাবধানে চলাচল করবেন। সব থেকে দুঃখজনক যে আমাদের যারা এই নৌযানগুলো চালান বা পরিচালনা করেন বা যারা ব্যবসাও করেন, যাত্রীদের সুরক্ষা যেমন তাদের দেখতে হবে আবার যাত্রীদেরও নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, যেসব নৌযান চলাচল করে, আমি মনে করি প্রত্যেকটারই রেজিস্ট্রেশনের সিস্টেম থাকা উচিত। এই রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে অনেক সময় কে, কার, কী ক্ষতিপূরণের কী ব্যবস্থা সেগুলো করা যায় না। দুর্ঘটনা রোধে নৌ-কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে জলযান পরিচালনার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা নৌযানে কতজন মানুষ উঠতে পারে, চলতে পারে, সেটা বিবেচনায় না রেখে ঠেলাঠেলি করে এক সঙ্গে বেশি লোক উঠতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেখানে নিজেদের জীবনটা চলে যেতে পারে, সেই কথাটা বিবেচনায় নিয়ে এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, যেই মানুষগুলোর জীবন হারায়, আর যারা আপনজন হারিয়ে বেঁচে থাকেন তাদের কষ্টের কথাটাও সবাইকে একবার চিন্তা করার অনুরোধ জানাই।

সুন্দরবন দিয়ে জাহাজ চলার প্রতিবাদ করেননি কেন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অনেকেই সুন্দরবন নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করেন, অনেক কথা বলেন। আমরা যখন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে গেলাম তার বিরুদ্ধে আন্দোলন, সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের কাছে আমার প্রশ্ন ঘাসিয়া খালটা যখন বন্ধ হয়ে গেল আর সুন্দরবনের ভিতর থেকে যেখানে জীববৈচিত্র্য পরিপূর্ণ জায়গা, যেখানে নীরবে সুন্দরভাবে তারা বসবাস করত, কখনো তাদের কেউ বিরক্তও করতে পারত না, সেখান থেকে যখন জাহাজ আসে তখন আমাদের এই আন্দোলনকারীরা তখন চুপ ছিলেন কেন? তারা তখন এই কথাটা আনেনি কেন যে সুন্দরবনের ভিতর থেকে পণ্য পরিবহন করলে ওই জায়গাগুলোতে জীববৈচিত্র্যও নষ্ট হবে, সুন্দরবনও নষ্ট হতে পারে। ঘাসিয়া খালের চ্যানেলের নাব্য আওয়ামী লীগের সরকারই ফিরিয়ে এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শাল্লা নদীর তীরে এখন আর পণ্যবাহী জাহাজ আসে না। সেখানে আমাদের সুন্দরবন এবং সুন্দরবনের যে জীববৈচিত্র্য, সেগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেটা সংরক্ষিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরটা স্থাপনের সময়ও সুন্দরবনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। বিদ্যুৎ কেন্দ্রও করা হচ্ছে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সুন্দরবনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেই অংশটা হেরিটেজ, সেখান থেকেও প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে ‘সুপার ক্রিটিক্যাল’ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হচ্ছে। সরকারপ্রধান বলেন, ওই অঞ্চলের মানুষের তেমন কোনো কাজ ছিল না, তারা কিছু করে খেতে পারত না, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছিল না। মাছ ধরা অথবা মানে… প্রকৃতপক্ষেই তারা খুব দরিদ্র এবং খুবই কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করত। শুধু মোংলা বন্দরটা যতটুকু তাদের আর্থিক সচ্ছলতা দিত। কিন্তু এখন এই একটা জায়গা (বিদ্যুৎ কেন্দ্র) ঘিরে তাদের অনেক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়েছে। জায়গাটারও অনেকটা আধুনিকায়ন হচ্ছে।

পরমুখাপেক্ষী হব না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে যেন আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হতে না হয়। কারও মুখের দিকে তাকিয়ে যেন চলতে না হয়। আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। নিজের পায়ে দাঁড়াব আর সম্মান নিয়ে চলব। এটিই হচ্ছে আমাদের চিন্তা। তিনি বলেন, আমরা সরকারে আসার পর সারা দেশের উন্নয়ন করছি। কারণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, আমি নৌমন্ত্রীকে দিয়েছি একেবারে উত্তরবঙ্গ থেকে। যাদের বড় বড় নদী দেখার সুযোগ হয় না। তাদের আমি নিয়ে আসছি। অর্থাৎ বাংলাদেশটা আমাদের, সবাই সবাইকে চিনুক। এর পূর্বে মন্ত্রী দিয়েছিলাম ঠাকুরগাঁও থেকে, এবার দিয়েছি দিনাজপুর থেকে। কারণ আমি চাই যে, পুরো অঞ্চল তারা ঘুরে দেখুক এবং এই নদী অঞ্চলের মানুষ কী রকম কষ্টে থাকে আর তাদের কষ্টটা যেন দূর করা যায়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা। অবশ্য পানি সম্পদে দিয়েছি, একেবারে বরিশালের মানুষ, যাতে ঠিকভাবে উন্নতিটা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে এখানে আমরা রেল সংযোগ দিচ্ছি এবং আমাদের আরেকটা পরিকল্পনা রয়েছে যে, আমাদের রেল সংযোগটা একেবারে দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছি। পায়রা বন্দর পর্যন্ত যেন যায় তার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি হচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারেও যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, যখনি পদ্মা সেতু হয়ে যাবে এবং নদীপথগুলো আরও সচল হবে, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার যাতে উন্নতি হয় এবং আমাদের পণ্য পরিবহন ও পণ্য রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ পণ্য যাতে নৌপথে হতে পারে, সবদিকে বিবেচনা করেই আমি নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম পায়রা বন্দর তৈরি করা। যদিও এটি পায়রা নদীর তীরে না। কিন্তু আমি নামটা দিয়েছি পায়রা, পায়রা তো শান্তির প্রতীক। পায়রা বন্দরকে ঘিরে তার সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে একটা জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ে তোলাসহ জাহাজ ভাঙা শিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, একসময় পদ্মা সেতু নিয়ে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে। তখন আমরা বলেছিলাম কারও অর্থ না, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আল্লাহর রহমতে, আপনাদের দোয়ায়, বাংলাদেশের জনগণের দোয়ায় আমরা সেই পদ্মা সেতু নিজের অর্থায়নে তৈরি করছি। এখন আমাদের যে রিজার্ভের টাকা, সেই রিজার্ভের টাকা দিয়েই আলাদা একটা ফান্ড তৈরি করছি। যেটা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন নামে অভিহিত। সেই ফান্ড থেকে প্রথম যে অর্থটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা আমরা পায়রা বন্দরের যে ক্যাপিটাল ড্রেজিং হবে, সেই ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের টাকাটা আমরা এই ফান্ড থেকে দিয়ে দেব, যদিও বেলজিয়ামের সঙ্গে চুক্তি আছে। তারপরও এখানে আমরা নিজের অংশটা আমাদের নিজেদের টাকা দিয়েই কাজ শুরু করে দিচ্ছি। কাজেই এই উদ্যোগটা গ্রহণ করেছি। যাতে বাংলাদেশকে আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হতে না হয়। কারও মুখের দিকে তাকিয়ে যেন চলতে না হয়। আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয়ী জাতি। নিজের পায়ে দাঁড়াব। আর সম্মান নিয়ে চলব। এটাই হচ্ছে আমাদের চিন্তা। প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে জনগণের কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে বলেন, আমি জানি করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা আমরা হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তবু এই ক্ষতি আমাদের নিজেদেরই পুষিয়ে নিতে হবে। তার জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আর যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন করে যাচ্ছি। আর নদীগুলোকে বাঁচাতেই হবে আমাদের। নৌপথের সঠিক ও সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের পণ্য পরিবহন সহজ হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাচ্ছি, এটা আরও শক্তিশালীভাবে গড়ে উঠুক। বাংলাদেশ বদ্বীপ; এই বদ্বীপকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সেই জন্য এরই মধ্যে আমরা একটা প্ল্যান করেছি। ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ অর্থাৎ ২১০০ সাল পর্যন্ত একটা পরিকল্পনা কাঠামো তৈরি করে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। এই বদ্বীপটা যেন সুরক্ষিত হয়, উন্নত হয়। এই অঞ্চলের মানুষ যাতে আর কখনো দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত না হয়। সার্বিকভাবে দেশের মানুষের উন্নতি হয়। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই পরিকল্পনা করে দিয়ে গেলাম। আমাদের পরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যারা আসবে নিশ্চয়ই তারা অনুসরণ করবেন, যাতে আমাদের আমদানি রপ্তানিসহ সবকিছু বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে আমাদের অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলোর সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের আমদানি-রপ্তানির আরও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, সুগম হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্যকে সহজ করার লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে নৌ-পথে বাণিজ্য আরও বাড়িয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। তা ছাড়া বাংলাদেশের বন্দরগুলো যেন নেপাল, ভুটান, ভারত ব্যবহার করতে পারে সেই সুযোগটাও আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে নদীপথগুলো সচল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ’৭৫-এর পর ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি। দেখলাম মোংলা বন্দর মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে আছে। আমাদের প্রায় ৪০ ভাগ খাদ্য সামগ্রী মোংলা বন্দরে নামত এবং খুব সহজে নৌপথে বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে যেত। ঘাসিয়াখালী নদীটা প্রায় বন্ধ অবস্থায় ছিল। সেটা ড্রেজিং করে সচল করা হয়েছে। জাতির পিতার যে চিন্তাভাবনা, যে নীতিমালা ছিল, সেটাকে মাথায় রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী যারা ক্ষমতায় ছিল জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ বা খালেদা জিয়া তাদের আমলে কিন্তু কোনো ড্রেজার সংগ্রহ করা বা নদী খনন করা, এদিকে তাদের কোনো দৃষ্টি ছিল না। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৮টি ড্রেজার সংগ্রহ করি এবং আজ আরও ২০টি ড্রেজার বিআইডবিøউটিতে যুক্ত হয়ে মোট ৪৫টি ড্রেজার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তা ছাড়া বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে বছরে প্রায় ৭৫০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা যায়। আর নদ-নদীগুলো সংরক্ষণের জন্য ড্রেজিংয়ের চাহিদা ১ হাজার ৬০০ লাখ ঘনমিটার।’

আরও দেখুন

জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সজাগ ও সর্তক থাকতে হবে- দুলু

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,,,বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন …