সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / যে পথ ধরে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে মাইলফলক

যে পথ ধরে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে মাইলফলক

যে পথ ধরে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে মাইলফলকবর্তমান বিশ্বে বিদ্যুৎ একটি অপরিহার্য বিষয়ের নাম। ভেবে দেখুন যদি এমন হয় যে আজকে সারা দিন বিদ্যুৎ থাকবে না- তাহলে কি আপনি আপনার কাজ ঠিকঠাক মত করতে পারবেন? আর তাই বিদ্যুৎ একটি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সঞ্চালক ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় একসময় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত যথেষ্ট পিছিয়ে ছিলো।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিদ্যুৎ খাতটি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একীভূত অবস্থায় ছিল। এই খাতের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ খাতটিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক করা হয়।

১৯৯৬ সালে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী অব বাংলাদেশ দায়িত্ব গ্রহণ করার সময় ২৩০ কিলোভোল্টের ট্রান্সমিশন লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৮৩৮ সার্কিট কিলোমিটার এবং ১৩২ কিলোভোল্টের ট্রান্সমিশন লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৪৭৫৫ সার্কিট কিলোমিটার।

তবে একবিংশ শতকের শুরুর দিকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক উন্নয়নের গতি অনেকটাই হ্রাস পায়। তৎকালীন সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও দাতা সংস্থাগুলো থেকে বিনিয়োগের অভাবে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয় মাত্র ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে সারাদেশের লোডশেডিং এর পরিমাণ ছিল প্রতিদিন
৫০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট। এ সময় বিদ্যুতের দাবীতে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে বড় আন্দোলন ঘটেছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে আন্দোলনে নামে এলাকাবাসী। একই সময় রাজধানীর শনির আখড়ায় হাজার হাজার এলাকাবাসী বিদ্যুৎ ও পানির দাবীতে রাস্তায় নেমে আসে।

২০০৮ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ, তার পর থেকেই দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আসতে থাকে অভূতপূর্ব
পরিবর্তন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল নাগাদ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এসে দাঁড়ায় ৪৯৪২ মেগাওয়াট। প্রকৃত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩২৬৮ মেগাওয়াট (৬ই জানুয়ারি, ২০০৯)। ২০১০ ও ২০১১ সালে দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫১৭৪ মেগাওয়াট ও ৪৬৯৮.৫ মেগাওয়াট। ২০১১ সালের জুন মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪,৬০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়।

২০১২ সালের মার্চ মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৮০০৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। পিডিবি ২২ মার্চ, ২০১২ তারিখে রেকর্ড ৬০৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩,১৭৯ মেগাওয়াট। এবং সর্বশেষ তথ্যমতে ২০১৮ সালে ১২,৮৯৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ নভেম্বর ২০১৯ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৭ বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্র জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হলো- আনোয়ারা ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, রংপুরে ১১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলীতে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিকলবাহা ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, পটিয়া ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেঁতুলিয়া ৮ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গাজীপুর ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।

দেশে বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতাধীন ২৩ উপজেলা হলো- বগুড়ার গাবতলী, শেরপুর, শিবগঞ্জ, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, ফরিদপুরের মধুখালী, নগরকান্দা, সালথা, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, পলাশবাড়ী, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর, নবীগঞ্জ, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, মহেশপুর, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, নাটোরের বড়াইগ্রাম, লালপুর, সিংড়া, নেত্রকোনার বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ এবং পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী।

আরও দেখুন

সাড়ে ৪ মাস পর হিলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে নিহত নাইমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক হিলি ,,,,,,,,,,,,,,,গত ৪ আগস্টে দিনাজপুরের হিলিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেনিহত নাইমের লাশ প্রায় …