রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে ১৩ হাজার ৫০২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ বহুদিনের। এক সময় ২৪ কিলোমিটার নির্মাণের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৬০ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নান্দনিক ও আধুনিক এ সড়কের প্রতি কিলোমিটারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২৫ কোটি টাকা।
এ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের জন্য জায়গা চিহ্নিতকরণ এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণের বিষয়ে এরই মধ্যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র গেছে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) অধীনে ‘ঢাকা ইনার সার্কুলার রুট ফেইজ-২’ প্রকল্পের আওতায় এ কাজ সম্পন্ন হবে। যার মধ্যে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দু’পাশের তীরে ফুটপাথ, ইকোপার্ক নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, বসার বেঞ্চ ও আধুনিক লাইটিং ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া বর্ষার সময় বাঁধের উপরে যেন পানি না ওঠে সেজন্য পানি নিষ্কাশনেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে।
দোহার-বিরুলিয়া-গাবতলী-চাষারা-শিমরাইল-ডেমরা হয়ে সার্কুলার রুটটি নির্মিত হবে। পর্যায়ক্রমে দুটি প্রকল্পের আওতায় সার্কুলার রুটটি টঙ্গী-আশুলিয়া-সাভার-গাবতলী-বসিলা-কদমতলী-কালাকান্দি-ফতুল্লা-হাজীগঞ্জ-শিমরাইল-ডেমরা-বেরাইদ-পূর্বাচল হয়ে আব্দুল্লাহপুরে মিলিত হবে। ৪৭ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট, ১৬ কিলোমিটার ওভারপাস, ফ্লাইওভার, ইউলুপ, ৪০৭ মিটার বক্স কালভার্ট এবং বুড়িগঙ্গা নদীর উপরে এক হাজার ৪৩৫ মিটার সেতু নির্মাণ করা হবে নান্দনিক এ সড়কটিতে।
সূত্র আরো জানায়, কনস্ট্রাকশন অব ঢাকা ইনার সার্কুলার রুট-২ প্রকল্পের আওতায় এ সড়কটি নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৫০২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পের ব্যয়ের মোট অর্থের মধ্যে ৬ হাজার ১৯১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সহকারী প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, প্রকল্পটির পিডিপিপি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারি অর্থায়নের পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় বৈদেশিক ঋণ নেয়া হবে। এ জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রস্তাবটি ইআরডিতে পাঠানো হবে।
সওজ-এর অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুর বলেন, ঢাকার ভেতরে যানজট অনেক বেশি। এই যানজট নিরসনে ঢাকার চারপাশ ঘিরে সড়ক নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, সার্কুলার রোড ফেইজ-২ এর আওতায় নদী তীরের পাশে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোথায় কত জমি অধিগ্রহণ করতে হবে তা চিহ্নিতকরণ এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণের বিষয়ে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণে স্ব স্ব জেলার অতিরিক্ত প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়টি জরুরিভিত্তিতে সম্পন্ন করবেন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক। এই প্রকল্প শেষ হলে ঢাকার যানজট অনেক কমে আসবে।