বৃহস্পতিবার , ডিসেম্বর ২৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / যমুনার বুকে বিরামহীন নির্মাণযজ্ঞ

যমুনার বুকে বিরামহীন নির্মাণযজ্ঞ

নিউজ ডেস্ক:
রাজধানী ঢাকা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীতে বর্তমান সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে নতুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতু। এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু। সেতুটি দিয়ে দিনে ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে।

এ পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৪৭ শতাংশ।

kalerkanthoচলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ার পর বাড়বে রেলের গতি, বাড়বে সক্ষমতা। এই সেতুর মাধ্যমে দেশের পূর্বাঞ্চল রেল ও পশ্চিমাঞ্চল রেল পরস্পরের সঙ্গে নতুন আঙ্গিকে যুক্ত হবে।

৪.৮ কিলোমিটার সেতুটি দাঁড়াবে ৫০টি খুঁটির ওপর। এতে বসবে ৪৯টি স্প্যান। স্প্যানগুলো যুক্ত করতে ১৭টি ট্রাস্ট ব্যবহার করা হবে। প্রথম ট্রাস্টের কাজ শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। সেতুর দুই পাশে ০.০৫ কিলোমিটার সংযোগ সেতু, ৭.৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে সংযোগ বাঁধ থাকবে। আর লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে দুই অঞ্চলে বিভক্ত। বঙ্গবন্ধু রেল সেতু চালু হলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের বর্তমান অবস্থা পাল্টে যাবে। মূলত যমুনা নদী রেলওয়ের দুই অঞ্চলকে বিভক্ত করে রেখেছে। বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর পূর্বাংশ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম পর্যন্ত এলাকা পূর্বাঞ্চল। আর সেতুর পশ্চিমাংশ থেকে রাজশাহী, খুলনাসহ পশ্চিমাঞ্চল।

বঙ্গবন্ধু সেতুতে বর্তমানে আছে এক লাইনের রেল ট্র্যাক। এই লাইন দিয়ে খুব ধীরে ট্রেন চলাচল করে। পূর্ব স্টেশন থেকে একটি ট্রেন ছাড়লে পশ্চিম স্টেশনের ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হয়। নির্মীয়মাণ বঙ্গবন্ধু রেল সেতু হলো ডুয়াল গেজ রেল সেতু। সেতুটি দিয়ে ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে। ফলে সেতু পারাপারে আর অন্য পারে ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হবে না।

রেলের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করছে। নতুন সেতু চালু হলে দিনে চলবে ৮৮টি ট্রেন। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যেখানে ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করে, সেখানে নতুন এই রেল সেতুতে ব্রড গেজ ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে। এতে সময়ও বাঁচবে।

প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নির্মাণকাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৪৭ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৬.৭৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত স্প্যান বসানো হয়েছে ছয়টি। বসানোর জন্য প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছেছে আরো ১৮টি স্প্যান। এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে ভিয়েতনামে।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সেতুর মূল নির্মাণকাজ শুরুর সময় করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সে সময় কাজের গতিও ছিল কম। আমরা এখন সেটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি, প্রকল্পের নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করা যাবে। ’

তিনি বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি প্রকল্পের কাজে কোনো প্রভাব ফেলেনি। ফলে ব্যয় বাড়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

এদিকে প্রকল্পের আওতায় নদীশাসনের কাজ চলমান রয়েছে। আর এ পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৪৩১ একর। সেতুর দুই পাশের সংযোগ বাঁধের নির্মাণকাজও এগিয়ে চলেছে।

সেতুর মোট ৫০টি খুঁটির মধ্যে আটটির কাজ শেষ হয়েছে। আরো ৩০টির কাজ শেষের পথে। এই ৩৮টি খুঁটির মধ্যে সাতটির অবস্থান পশ্চিমাঞ্চলে, বাকি ৩১টি পূর্বাঞ্চলে। এর মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলে কাজের গতি কিছুটা ধীর। সেতুর ৫০টি খুঁটির মধ্যে ২৩টি পশ্চিমাঞ্চলে আর ২৭টি পূর্বাঞ্চলে।

এই রেল সেতুটি নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। প্রথম সংশোধনীর পর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ (চার হাজার ৬৩১ কোটি টাকা)। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় আগুনে পোড়া তিন পরিবার পেল সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক বাগাতিপাড়া,,,,,,,,,,,,,নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে …