শনিবার , নভেম্বর ১৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / মেট্রোরেল ব্যবহারে যত্ববান হতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

মেট্রোরেল ব্যবহারে যত্ববান হতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নয়, বরং ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্র্নির্ধারণ ও সমন্বয়ে সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

পাশাপাশি মন্ত্রিসভা শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২২’র খসড়া নীতিগত অনুমোদন  দেওয়া হয়েছে। ঋণ প্রাপ্তি  ও পণ্য রপ্তানিতে কৃষিপণ্যের মতো সুযোগ-সুবিধা দিতে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে এখন থেকে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ কথা বলেন।


এছাড়া রাজধানীতে চালু হওয়া মেট্রোরেল ব্যবহারে সকলকে যতœবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে জন্য জনসচেতনতা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ কথা বলেন। 
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আপনারা জানেন, গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন হয়েছে। সেখানে মানুষের বিপুল আগ্রহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা যেন এটা প্রচার করি ব্যবহারে সচেতন হতে। সার্বিক যতœ নিয়ে যেন আমরা ব্যবহার করি, সে বিষয়ে জনসচেতনতা  তৈরি করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মেট্রোরেল সরকারের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছিল। এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে  গত ২৮ ডিসেম্বর বেলা ১১টার পর উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের সি-১ ব্লকের খেলার মাঠে নামফলক উন্মোচন করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন ২৯ ডিসেম্বর বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করে মেট্রোরেল। সীমিত পরিসরে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ মেট্রোরেলে চড়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে।
চলাচল শুরু করার পর মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক তারের ওপর ফানুস এসে পড়ায় ১ জানুয়ারি দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল মেট্রোরেল চলাচল। সীমিত পরিসরে চলাচলের মাধ্যমে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে মেট্রোরেল থেকে ৮৮ লাখ টাকা আয় হয়েছে। আর যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ৯০ হাজার।
‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০২২’ সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি আগে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। তখন সংসদ অধিবেশন না থাকায় অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। এখন সংসদ চলমান আছে এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও রয়েছে সংসদে ওঠানোর। অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করার জন্য এটি আবার সাধারণ প্রক্রিয়ায় সংসদে নিতে হবে। সেজন্য মন্ত্রিসভায় ঠিক আগের অধ্যাদেশটাই সংসদে উপস্থাপনের জন্য নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ- ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। গত ১ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২২’ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ অধ্যাদেশ বলে বিইআরসির পাশাপাশি সরকার চাইলেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াতে বা কমাতে পারবে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে সেখানে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্র্নির্ধারণ বা সমন্বয়ে সরকারের ক্ষমতা শিরোনামে নতুন একটি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ওই ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্র্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।
বিইআরসি আইন সংশোধনের বিষয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর তখনকার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, আমাদের এখন বিইআরসি এগুলো (দাম সমম্বয়) হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসির কিছু কিছু জায়গায় একটু সমস্যা হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে। কারণ, আইনে বলা আছে, বিইআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এসব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন হয়, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে  সমন্বয় করতে পারে না।

সেজন্য বিইআরসির আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন বিশেষ কারণে এই ট্যারিফ নির্ধারণ করতে পারবে। স্বাভাবিকভাবে দাম সমন্বয়ের কাজ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনই করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এক্ষেত্রে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে।
শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া অনুমোদন ॥ শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২২’র খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বছরের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বর্তমান সরকারের ১০০৮তম সভা। সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ৫টি ছিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে। আর ৩টি ছিল নীতি নির্ধারণী কাজ। শরিয়তপুরে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হবে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

এটি বাংলাদেশের নবম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হবে এবং দেশের ৫৪তম বিশ্ববিদ্যালয়। সে জন্য শেখ হাসিনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২২’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে তা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই আইনের মূল  বৈশিষ্ট্য অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে রকম আছে অনেকটা সে রকমই।
কৃষিপণ্যের মর্যাদা পেল পাট ॥ ঋণ প্রাপ্তি  ও পণ্য রপ্তানিতে কৃষি পণ্যের মতো সুযোগ-সুবিধা দিতে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে এখন থেকে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বর্তমান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পাটজাত পণ্য ও পাটের আঁশের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি এখানে অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এখন থেকে পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। এতদিন এটা কৃষিপণ্য ছিল না।
অনেকদিন ধরেই পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সুপারিশ ও দাবি জানানো হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, এটাকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করা হবে। পাশাপাশি সে অনুযায়ী পাট খাত কৃষির সব সুযোগ-সুবিধা পাবে।
পাট তাহলে এতদিন কী পণ্য হিসেবে বিবেচিত হতো সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পাট উৎপাদনের যে প্রক্রিয়া ছিল, অনেকক্ষেত্রে শিল্পজাত পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পাট উৎপাদনে উৎসাহ যাতে বেশি দেওয়া যায়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন। পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হলে কৃষক ও পাট খাত কীভাবে উপকৃত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে পাট চাষিরা কৃষি ঋণের মতো ঋণ পাবেন। রপ্তানি খাতের সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে এটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও দেখুন

পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …