নিউজ ডেস্ক:
একের পর এক মেগা প্রকল্পে পাল্টে যাচ্ছে চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক চিত্র। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ। শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আরও কয়েকটি। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে চলছে কয়েক লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। সব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কর্মসংস্থান হবে লাখ লাখ মানুষের। আমূল পরিবর্তন আসবে অর্থনৈতিক ও যোগাযোগব্যবস্থায়। সংশ্লিষ্টদের মতে, এসব মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির হাব হবে চট্টগ্রাম। একই সঙ্গে সত্যিকার বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে আবির্ভূত হবে চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর। তাই প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক আগ্রহে একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আশা করি, ভবিষ্যতেও অনেক মেগা প্রকল্প হবে এ অঞ্চলে।’
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এ সরকারের নেওয়া প্রকল্প কর্ণফুলী টানেল, বে-টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, গভীর সমুদ্রবন্দর হবে দেশের অর্থনীতির টার্নিং পয়েন্ট। এ প্রকল্পগুলো চালু হলে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির হাব হবে চট্টগ্রাম।’
জানা যায়, ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। ক্ষমতায় আসায় পর চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনৈতিক হাব হিসেবে গড়ে তুলতে নেওয়া হয় একের পর এক প্রকল্প। এরই মধ্যে গড়ে উঠছে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। এতে প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ শিল্পনগর থেকে প্রতি বছর ২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হবে। কর্মসংস্থান হবে ১৫ লাখ মানুষের। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তৈরি বঙ্গবন্ধু টানেল চীনের সাংহাইয়ের আদলে চট্টগ্রামও হবে ওয়ান সিটি টু টাউন। টানেলের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের শুরুতে এ টানেল দিয়ে শুরু হবে যান চলাচল। শুরুতে এ টানেলে প্রতি বছর ৩০ লাখের বেশি যান চলাচল করবে। টানেলের কারণে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ও পর্যটন খাতে আমূল পরিবর্তন আসবে। দেশের অর্থনীতির প্রাণ খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়নের জন্য নেওয়া হয়েছে ৩০ বছর মেয়াদি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প। কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে বহুগুণ। এতে বাড়বে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও ধারণের ক্ষমতা। এ ছাড়া নির্মাণাধীন বে-টার্মিনাল হবে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে ছয় গুণ বড়। এখানে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ ভিড়তে পারবে। এ টার্মিনালে বছরে হ্যান্ডলিং হবে আরও ৩০ লাখ কনটেইনার। লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চট্টগ্রামের যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের চলমান ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্প এ এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার আরেকটা মাইলফলক হয়ে উঠবে। এ ছাড়া কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন, মহেশখালী ইকোনমিক জোন পুরোদমে চালু হলে কর্মসংস্থান হবে লাখ লাখ মানুষের। মহেশখালীতে নির্মাণাধীন এলএনজি টার্মিনাল, গভীর সমুদ্রবন্দর, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথ চার লেনে উন্নীতকরণ চট্টগ্রামকে অর্থনীতির হাব হিসেবে অনেক দূর এগিয়ে নেবে।