নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর:
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাদের অবর্ণীয় নির্যাতনের স্বীকার হন নাটোরের লালপুরের সোহাগী বেগম। একজন নারী হিসেবে অমূল্য ত্যাগ স্বীকার করেন তিনি। কিন্তু আজও একাত্তরের নির্যাতিতা নারী হিসেবে এখনো মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পায়নি তিনি। ৬২ বছর বয়সে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে জীবন চলাচ্ছে তিনি। সরকারের সামান্য সুহানুভূতি পাল্টে দিতে পারে তার আসন্ন বাধ্যকের জীবন। এই বয়সে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে একাত্তরের নির্যাতিতা নারী সোহাগী বেগমের চোখের জলে তার আকুতিই বলে দেয় জীবন যুদ্ধে বড়ই ক্লান্ত তিনি।
১৯৭১ সালে ১৮ মার্চ নাটোরের লালপুর উপজেলার মধুবাড়ী গ্রামে অর্তিকত হানা দেয় পাকিস্তানের সেনা ও তাদের দোসর রাজাকাররা। তখন ১৩ বছর বয়সী সোহাগী বেগম নরপিশাচদের শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হন। সেই দূর্বিসহ স্মৃতি আজও তাড়া করে তাকে। তবে এখনো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি মেলেনি তার। বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে সোহাগী বেগম। এতে খুবই কষ্টে দিন যাপন করতে হয় তাকে।
একাত্তরে নির্যাতিতা নারীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সরকারী ভাবে ঘোষণার পর সামান্য স্বস্তির মর্যাদাপূর্ণ জীবনের স্বপ্ন দেখেছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা র্নিবাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেন তিনি। তবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি মেলেনি সোহাগী বেগমের। স্থানীয় সংসদ সদস্য সম্প্রতি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিলেও সোহাগী বেগমের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলাটা দূর্ভোগ মনে করেন তিনি। একাত্তরের লাখো নির্যাতিতা নারী তাদের অমূল্য ত্যাগ স্বীকার করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আগেই নির্যাতিতা সোহাগী বেগম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চান তার শুভাকাঙ্খীরা।
এ বিষয়ে সোহাগী বেগম কথা বলতে গিয়ে শুধু চোখের জল ঝরতে দেখা যায় তার। কোন কথায় বলতে পারেনি তিনি।
এ বিষয়ে সোহাগী বেগমের ছোট ছেলে সাজদার রহমান পানি ঝরা চোখে জানান, দিনমুজুরীর কাজ করে কোন রকম ভাবে সংসার চালায় সে। ভারাকার্ন্ত মনে বলেন, তার বয়স তখন এক থেকে দুই বসর হবে। তিনি তার বাবা ও বড় ভাই সহ এলাকার মানুষের মুখে ১৯৭১ সালের আনুমানিক ১৮ মার্চ পাকিস্তানের সেনাদের হাতে তার মা নির্যাতনের শিকার হয়েছে এ কথা শুনেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে গবেষণামূলক বিভিন্ন লেখায় তার মা সোহাগী বেগমের নির্যাতনের কথা উঠে এসেছে। তবুও মুক্তিযোদ্ধো হিসেবে স্বীকৃতি মেলেনি তার মা সোহাগী বেগমের।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) শাম্মী আক্তার বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি।
এ বিষয়ে নাটোর-১ লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ইতিমধ্যে তাকে একটি বাড়ী তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নামের যেন তালিকা হয়। এ জন্য সংসদ সদস্য হিসেবে যা সহযোগীতা করার প্রয়োজন তাই করবো। আশাকরি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধা পাবেন উনি এটাই প্রত্যাশা করি।
আরও দেখুন
পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!
নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …