সোমবার , নভেম্বর ১৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / মালয়েশিয়ায় আটক সাবেক হাইকমিশনার খায়রুজ্জামান

মালয়েশিয়ায় আটক সাবেক হাইকমিশনার খায়রুজ্জামান

নিউজ ডেস্ক:

জেলহত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামি ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার মেজর (অব.) মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে আটক করেছেন মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বুধবার মালয়েশিয়ার আমপাং সেলাঙ্গর নামক এলাকার ১১ ব্লক বি ২-এর ৭ নম্বর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাকে আটক করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের খাতায় পলাতক থাকা খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে তাকে আটক করার কথা জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জাইনুদ্দিন। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন, ‘কোনো দেশ থেকে অনুরোধ এলে এবং আমরা যদি সে অনুরোধ যৌক্তিক মনে করি তাহলে তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও  নিয়ম মেনেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

ঢাকায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবারই চিঠি দিয়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে। খায়রুজ্জামানকে অভিবাসনসংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের জন্য গ্রেফতার করা হয়। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন ইস্যুতে যাদের গ্রেফতার করা হয় তাদের নিজ নিজ দেশে ডিপোর্ট করার জন্য ডিপোর্টেশন সেন্টারে অন্তরিন রাখা হয়, তাকেও সেখানে অন্তরিন রাখা হয়েছে। আমরা আশা করি দ্রুত এখানে ফেরত আনা হবে।’ জেলহত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হতে পারে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যত দূর জানি বা বুঝি তাকে সশরীরে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করার এবং এ মামলাটি আবারও খতিয়ে দেখার সুযোগ আছে। তবে তা আইন মন্ত্রণালয়ই ভালো বলতে পারবে।’ জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন মেজর (অব.) এম খায়রুজ্জামান। এরপর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামিদের সঙ্গে লিবিয়া চলে যান। ১৯৭৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি আত্তীকৃত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকাকালে তাকে ফিলিপাইন থেকে ফেরত এনে গ্রেফতার করা হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায়ই তাকে অবসর দেওয়া হয়।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৪ সালে ট্রায়াল কোর্টে জেলহত্যা মামলা থেকে খায়রুজ্জামানকে খালাস দেওয়া হয়। তবে মামলা চলাকালেই ‘নজিরবিহীন’ভাবে তাকে পদোন্নতি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে তাকে ‘সসম্মানে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে তাকে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদেও নিয়োগ দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের আগস্টে তাকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি এম খায়রুজ্জমানকে কুয়ালালামপুর থেকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই বছরের ৩ জুলাই পর্যন্ত ছুটির আবেদন করেন তিনি। ৪ জুলাই থেকে তার এলপিআরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে সরকার তার ছুটির আবেদন অগ্রাহ্য করে ৮ মার্চের মধ্যে দেশে ফিরতে আদেশ দেয়। দেশে ফেরার আদেশ পেয়ে ২৪ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব ত্যাগ করে নিরুদ্দেশ হন। সরকার এরপর তার পাসপোর্ট বাতিল করে। তাকে দেশে ফিরতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর পর থেকেই এত দিন পর্যন্ত পলাতক ছিলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ও হাইকমিশনার। খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমান সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। বিএনপির জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের প্রধান ছিলেন রিটা রহমান। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দেন। রিটা রহমানের পিতা মশিউর রহমান যাদু মিয়া ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী।

আরও দেখুন

নাটোরের লালপুরে ঠিকাদারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক লালপুর,,,,,,,,,, নাটোরের লালপুরে মজিবর রহমান (৫৫) নামে এক ঠিকাদারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। …