শনিবার , নভেম্বর ১৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / মামুনুল তার যৌন লালসা চরিতার্থ করতে ঘর ভেঙেছে ঝর্ণার, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ; কি আছে ঝর্ণার মামলার এজহারে?

মামুনুল তার যৌন লালসা চরিতার্থ করতে ঘর ভেঙেছে ঝর্ণার, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ; কি আছে ঝর্ণার মামলার এজহারে?

হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন মামুনুল হকের স্ত্রী দাবি করা সেই জান্নাত আরা ঝর্ণা। আজ শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় এই মামলা (নং ৩০) দায়ের করেন তিনি। এর আগে বাবার আবেদনের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

বরাবর
অফিসার ইনচার্জ
সোনারগাঁও থানা, জেলা নারায়ণনঞ্জ।
বিষয়ঃ অভিযোগ দায়ের প্রসংগে।
জনাব,

যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিবেদন এই যে, আমি জান্নাত আরা ঝর্ণা (২৭), পিতা-বীর মুক্তিযোদ্ধা ওলিয়ার রহমান, সাং-কামারগাঁও, থানা-আলফাডাঙ্গা, জেলা-ফরিদপুর বর্তমানে ২৩/৩ নর্থ সার্কুলার রোড, উত্তর ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৫। আপনার থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, বিবাদী মামুনুল হক (৫০), পিতা-মরহুম মাওলানা শায়খুল হাদিস আজিজুল হক, সাং-৭/২, আজিমপুর রোড লালবাগ, ঢাকা বর্তমানে হাউজ নং-০৭, রোড নং-০১, ব্লক-ডি, কাদেরাবাদ হাউজিং মোহাম্মদপুর, ঢাকা এর সাথে আমার সাবেক স্বামী – মাওলানা শহিদুল ইসলাম এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে ২০০৫ সালে মামুনুলের সাথে আমার পরিচয় হয়। উল্লেখ্য যে, “মামুনুল হক এর সাথে পরিচয়ের পূর্বে আমাদের দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত সুখে শান্তিতে অতিবাহিত হচ্ছিল, যার ফলশ্রুতিতে আমাদের ঘরে ০২(দুই) জন সন্তান জন্মলাভ করে। স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে আমাদের বাসায় মামুনুল হকের অবাধ যাতায়াত থাকার সুবাদে পরিচয়ের শুরু থেকেই আমার উপর তার (মামুনুল হক) লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। যার ফলে সামাদের ছোটখাটো সাংসারিক মতানৈক্যের মধ্যে সে সু-কৌশলে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরী করতে থাকে। মামুনুল হকের কুমন্ত্রণায় আমাদের দাম্পত্য জীবন চরমভাবে বিষিয়ে উঠে। সাংসারিক এই টানা পোড়নের একপর্যায়ে তার (মামুনুল হক) কুপরামর্শে আমাদের মধ্যে ১০ই আগষ্ট ২০১৮ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর আমি পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অসহায় হয়ে পড়ি। আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক আমাকে সহযোগিতার নাম করে সু-কৌশলে ঢাকায় আসার জন্য আমাকে প্ররোচিত করে। আমি একজন আলেম-কে ভরসা করে সরল বিশ্বাসে তার সাথে ঢাকায় চলে আসি। ঢাকা আসার পর শুরুতে তার পরিচিত বিভিন্ন অনুসারীদের বাসায় আমাকে রাখে এবং নানাভাবে আকার ইঙ্গিতে আমাকে • কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। একপর্যায়ে আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তার প্রলোভনে পা দিতে বাধ্য হই। এরই ধারাবাহিকতায় তার পরামর্শে আমি ২৩/৩ নর্থ সার্কুলার রোড উত্তর ধানমন্ডি, কলাবাগান, ৩য় তলায় সাবলেট হিসাবে ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকি এবং তার ঠিক করে দেওয়া একটি বিউটি পার্লারে কাজ শিখতে থাকি। আমার বাসা ভাড়া ও আনুষাঙ্গিক খরচ সে দিতে থাকে। এক পর্যায়ে সে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। গত ০২ (দুই) বছর যাবৎ আমাকে বিভিন্ন সময় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরির নাম করে নিয়ে গিয়ে তার পরিচিত বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে রাত্রীযাপন ও বিবাহের আশ্বাস দিয়ে তার যৌন লালসা চরিতার্থ করে। একপর্যায়ে আমি বিবাহের কথা বললে সে আমাকে বিবাহ করব করছি বলে নানা অজুহাতে কাল ক্ষেপন করতে থাকে। সর্বশেষ গত ০৩/০৪/২০২১খ্রিঃ আমাকে ঘোরাঘুরির কথা বলে বেলা অনুমান ০৩.১৫ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও-এ অবস্থিত রয়েল রিসোর্টের ৫ম তলার ৫০১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আসে। সেখানে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখাইয়া আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও-এ অবস্থানকালে স্থানীয় জনগণ আমাদের রিসোর্টে আকস্মিক আটক করে এবং আমাদের (মামুনুল হক ও আমার পরিচয় জানতে চায়। আমরা কোন সদুত্তর দিতে না পারায় স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ি। পরবর্তীতে মামুনুল হক এর অনুসারীরা উক্ত রিসোর্টে হামলা করে আমাদেরকে নিয়ে যায়। ঐ ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে এবং মামুনুল হক আমাকে আমার ভাড়া বাসায় (২৩/৩ নর্থ সার্কুলার রোড উত্তর ধানমন্ডি, কলাবাগান যেতে না দিয়ে তার পরিচিত এক জনের বাসায় আমাকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক আটকে রাখে। উক্ত বাসায় আটক থাকাকালে আমাকে আমার পরিবার (সন্তান, বাবা-মা) সহ সকল আত্নীয় স্বজনদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে সু-কৌশলে আমার বড় ছেলে আব্দুর রহমান (১৭) এর সাথে যোগাযোগ করে আমার দুরাবস্থার কথা জানাই এবং আমাকে এই বন্দীদশা হতে উদ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় নিতে বলি। পরবর্তীতে ২৭/০৪/২০২১খ্রিঃ ডিবি পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে আনার পর জানতে পারি যে, আমার বাবা গত ২৬/০৪/২০২১খ্রিঃ তারিখ কলাবাগান থানায় আমাকে উদ্ধারের জন্য একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে আমার বাবার জিম্মায় প্রদান করে, পরবর্তীতে মামুনুল হকের অনুসারীদের হুমকি ও ভয়ভীতি এবং আমার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে পরামর্শ করে এ অভিযোগ দায়ের করতে বিলম্ব হয়।

অতএব, জনাবের নিকট আবেদন এই যে, উল্লেখিত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে মর্জি হয়।

বিনীত
জান্নাত আরা ঝর্ণা (২৭)

আরও দেখুন

নন্দীগ্রামে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত 

নিজস্ব প্রতিবেদক নন্দীগ্রাম ,,,,,,,,,,বগুড়ার নন্দীগ্রামে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন হেমন্তকাল। মাঠ …