বিশেষ প্রতিবেদকঃ
আশেপাশে কোন মানুষ নেই। রাস্তার পাশে পড়ে আছেন এক বৃদ্ধা। একদিন দুইদিন না, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ধরে পড়ে আছেন সহায় সম্বলহীন, অসহায় এই বৃদ্ধা। বৃদ্ধার দিকে এগিয়ে আসেনি কোন সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ কিংবা প্রশাসনের কোন কর্তাব্যক্তি। পাশে রয়েছে একটা কুকুর। কুকুরটি যেন বৃদ্ধাকে আগলে রেখে পাহারা দিয়ে চলেছে। কোথায় মানবধিকার, দেখছে না বৃদ্ধার হাহাকার। করোনার মধ্যে সবাই সামাজিক দূরত্ব না মেনে নিয়মের তোয়াক্কা না করে বাজার করতে, আড্ডা দিতে বের হতে পারছে অথচ অসহায় এই বৃদ্ধার দিকে তাকানোর মতো কেউ নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার ধারে তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বৃদ্ধার মাথার কাছে একটি কুকুর বসে আছে। কুকুরটি মাঝে মাঝে তার জায়গা বদল করে কখনও বৃদ্ধার পায়ের কাছে, কখনও পেছন দিকে, কখনওবা বৃদ্ধার সামনে বসে সময় কাটাচ্ছে। যেন বৃদ্ধাকে পাহারা দিচ্ছে কুকুরটি।
বৃদ্ধার কাছে গিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কোন কথা বলতে পারেন নি। দেখে বোঝা যাচ্ছিল তার শরীরে কথা বলার মতো শক্তিটুকুও নাই। খুব দ্রুত বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি জানান, এর আগে কখনও এই বৃদ্ধার ব্যাপারে তিনি কিছু শোনেননি।
মাধনগর ইউনিয়নের ৫ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমেনাকে বিষয়টি জানালে তিনি নারদবার্তাকে তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন, “এ-তো পাগল। অনেক দিন হলো এই মহিলা স্টেশন এলাকায় ঘোরাফেরা করে।” পাগলের কি এই রাষ্ট্রে বাঁচার বা নাগরিক সুবিধা পাবার অধিকার নেই? -এমন প্রশ্ন করলে কাউন্সিলর মোমেনা চুপ করে থাকেনে।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃদ্ধার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ এবং ৫ নং ওয়ার্ড মেম্বার জয়নাল আবেদিন ডলার।একজন ভ্যান চালক পাউরুটি ও পানি কিনে দেন।
নারদ বার্তার কাছ থেকে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাকিব আল রাব্বিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন