সুরজিত সরকার
সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশও থমকে গেছে করোনা মহামারিতে। করোনার সাথে লড়াই করতে করতে মানুষ রীতিমত নাকাল। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বিভিন্ন খাতের মত প্রান্তিক শ্রেণীর কৃষক। করলা চাষীদের মাথায় হাত পড়েছে। দাম নেই করলার। মণপ্রতি করলা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে তারপরও ক্রেতা নেই। ফলে জমিতেই প্রায় নষ্ট হচ্ছে করলা। অথচ করলার দাম গত মৌসুমে ছিল ১৮’শ থেকে ২হাজার টাকা মণ।
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার চেঁউখালি ও মাধনগরের বিলে প্রায় একশ’ থেকে দেড়শ’ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে করলা। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা আশা করেছিলেন এবার হয়ত ভালো দাম পাবেন।
আশপাশের মধ্যে এ অঞ্চলে করলার ফলন বেশি ভালো হয়। চাহিদাও বেশ ভালো। এখান থেকে নাটোর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে করলা কিনে নিয়ে যান পাইকারী ক্রেতারা।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য কোন পাইকার আসছেন না। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষীরা। স্থানীয় বাজারগুলোতে করোলা খুচরা বিক্রি হচ্ছে দশ থেকে পনেরো টাকা কেজি দরে।
চেঁউখালি গ্রামের করোলা চাষী ইউনুস এবার দশ শতাংশ জমিতে করোলা চাষ করেছেন। কিন্তু বিক্রি করার মত কোন সুযোগ পাচ্ছেন না। নারদ বার্তাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইউনুস জানান, বিঘা হিসেবে ধরলে, এক বিঘা জমিতে করলো চাষ করতে আট-দশ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু খরচের টাকা এবার উঠবেনা। বিক্রির জন্য পাইকার বা আড়ৎদার পাচ্ছিনা।
আর এক করোলা চাষী শফিকুর পরিবহন সমস্যাকে দায়ী করেন। শফিক বলেন, করোনাভাইরাসের জন্য গাড়ী আসেনা। এজন্য আমরা এবার করলো চাষ করে বিপদে পড়ে গেছি। যে দুই একজন পাইকার আসে দাম বলে না। বাধ্য হয়ে যে দাম বলে তারা সে দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার করোলা চাষ করে শংকার মধ্যে পড়েছেন তারা। উৎপাদন খরচও উঠবে কিনা, জানেন না তারা।
এ ব্যাপারে নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি নারদ বার্তাকে জানান, বিষয়টি আমি অবগত। বেশ কয়েকজন কৃষক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কৃষকের সমস্যা সমাধানের একটাই উপায় তাদের করলা বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে পারব।