শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / মাটির নিচে যাবে বিদ্যুতের তার

মাটির নিচে যাবে বিদ্যুতের তার

নিউজ ডেস্ক:
পীর-আউলিয়ার শহর সিলেট পেয়েছে ‘স্মার্ট’ শহরের খেতাব। এর কারণ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন। মাথার ওপর জট পাকানো দীর্ঘদিনের বৈদ্যুতিক তারসহ অন্যান্য তার মাটির নিচে নিয়ে যাওয়ায় বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে সিলেট। সিলেটের মতোই স্মার্ট শহর হয়ে উঠবে রাজধানী ঢাকাও। কারণ ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বদলে ফেলা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ রাজধানীজুড়ে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা তারের জঞ্জাল সরিয়ে তা মাটির নিচে নিয়ে যেতে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের গতি কিছুটা কমলেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা আশা করছেন ২০২৫ সালের মধ্যেই ঢাকার ঝুলন্ত তারের জঞ্জাল মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি.-এর (ডিপিডিসি) ‘এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীতে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বৈদ্যুতিক তারের জঞ্জাল সরানোর কাজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাটির নিচে তার নিয়ে যাওয়ার জন্য দুটি প্রকল্প আছে। এর একটির আওতায় জাহাঙ্গীর গেট থেকে বঙ্গভবনে মাটির নিচে তার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। আরেকটিতে আজিমপুর থেকে গাবতলীর প্রধান সড়কের বৈদ্যুতিক তারগুলো মাটির নিচে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এ কাজ শুরু হয়ে গেছে। সূত্র জানায়, এসব কাজ শুরু করতে হলে আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। তাই উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে কাজ শুরু করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর গেট থেকে শুরু করে এই কাজ এরই মধ্যে ফার্মগেট ছাড়িয়ে গেছে। আর আজমপুর থেকে গাবতলীর কাজটি ভেঙে ভেঙে করা হচ্ছে। বর্তমানে এই অংশে শেরেবাংলা নগর এলাকায় কাজ চলছে। এ ছাড়া ধানমন্ডি অংশের কাজও চলছে। সেখানে লাইন ঠিক করে ফেলা হয়েছে। এখন বাকি কাজের জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, মাসখানেকের মধ্যে ধানমন্ডি এলাকার বাকি কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে। এ ছাড়া তেজগাঁও এলাকায়ও কাজ শুরু হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের চলাচল এবং কাজের কোনো ক্ষতি না করে কাজ করতে হচ্ছে। বেশির ভাগ কাজই রাতের বেলা, যখন মানুষের চলাফেরা কমে আসে- তখন করতে হচ্ছে। ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, করোনা মহামারির জন্য বেশ অনেকটা সময় আমরা কাজ শুরু করতে পারিনি। সাত-আটমাস আগে কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রকল্পের কনসালটেন্ট  ফিনল্যান্ডের কোম্পানি থেকে এসেছে, আর ঠিকাদার কোম্পানি চীনের। মহামারিতে তাদের কাজ থেমে ছিল। বর্তমানে কাজের গতি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজের এই গতি ধরে রাখলে আশা করছি ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে রাজধানীর ঝুলন্ত তার মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে এই প্রকল্পের জন্য যে বাজেট ধরা হয়েছিল সেটি আর বৃদ্ধি করা হবে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিতের পর আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বিশেষ করে নিরবচ্ছিন্ন ও গুণগত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে মাটির নিচে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি। ডিপিডিসি যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে বিশেষ করে প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু যেমন- সচিবালয়, মন্ত্রীপাড়া, গণভবন, বঙ্গভবন, জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যদি বিদ্যুৎ চলে যায় তাহলে ক্ষতি বেশি হয়। এসব স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগটি ভূমিকা রাখবে। রাজধানীর মাথার ওপর ঝুলে থাকা তারগুলো খুবই পুরনো ও জরাজীর্ণ। সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতেই এগুলো ট্রিপ করে। আবার ঘনবসতির কারণে সামান্য বাতাস হলেই তারগুলোর ওপর বিভিন্ন জিনিস পড়ে শর্ট সার্কিট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি মাথায় রেখেই ঝুলন্ত তার অপসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ১৩২ কেভি বা ১৩২/১১ কেভি লাইনগুলো আগে অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকার পরিচ্ছন্নতার জন্যও মাথার ওপর থেকে তারের জঞ্জাল সরানো হচ্ছে।

আরও দেখুন

নাটোরে সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বাসদের মিছিল ও সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,, নাটোরে সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বাসদের মানববন্ধন এবং পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …