নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘কোভ্যাক্সের’ মাধ্যমে ‘মডার্নার’ তৈরি করোনাভাইরাসের ৩৫ লাখ টিকা বাংলাদেশে দ্রুতই পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল কেন্দ্রে বুধবার মডার্নার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ভায়াল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানানো হয়, আগামী সোমবার এ টিকা বাংলাদেশে পৌঁছাবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “বিজ্ঞানীদের কয়েটি দল এবং দুই দেশের আইনি ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ নিরাপদ ও কার্যকর এসব টিকার চালান দ্রততার সঙ্গে সরবরাহের জন্য এক সঙ্গে কাজ করেছে।”
প্রতিবেদনে জানানো হয় এরই মধ্যে শুক্রবার ইউক্রেনে ২০ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘কোভ্যাক্সের’ আওতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের টিকা দিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এসব টিকা পাঠানো হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ‘মডার্নার’ তৈরি টিকার দুটি ডোজ ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষকে দেওয়া যায়। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৮ দিন পর দিতে হয় দ্বিতীয় ডোজ। ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই টিকা সংরক্ষণ করতে হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা ‘গ্যাভি’ এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হলো ‘কোভ্যাক্স’। অনুন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোও যাতে করোনাভাইরাসের টিকার ন্যায্য হিস্যা পায়, তা নিশ্চিত করতে এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ‘কোভিশিল্ডের’ তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়।
কিন্তু দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় সরকার। পরে চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম ও যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি টিকা নিয়ে দুই মাসের বেশি সময় পর গত ১ জুলাই নিয়ে আবারও গণটিকাদান শুরু হয়।
কোভিশিল্ড ছাড়াও দেশে মোট আটটি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কোভিশিল্ড, ফাইজার-বায়োএনকেট, মডার্না আর সিনোফার্ম- এই চার কোম্পানির মোট ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এখন পর্যন্ত হাতে পেয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার ১৩১ ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।