“ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেবরাও তো বিএনপি ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে গিয়েছিলেন, তাতে কী হয়েছে? দল আরো শক্তিশালী হয়ে ক্ষমতায় এসেছে, বিএনপি একটা বটগাছ। কে আসলো আর কে গেলো তাতে কিছু আসে যায় না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ যদি মনে করেন তার পক্ষে রাজনীতি করা সম্ভব নয়, তিনি পদত্যাগ করতেই পারেন। “এমনটাই বলছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ।
বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা দল থেকে পদত্যাগ করলেও তাদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপির। তাদের পদত্যাগ পত্র আপাতত গ্রহণ না করে কোনো না কোনোভাবে তাদের দলের সঙ্গেই রাখার কৌশল নিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। সপ্তাহে বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা পদত্যাগ করলেও তাদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি এই দলটি।
১ নভেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর নবগঠিত কমিটিতে যুবদলের সাবেক নেতাদের মূল্যায়ন না করায় কেন্দ্রীয় পদ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠায় সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এমএ হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েক নেতা। আর এ নিয়ে বিএনপির ভাঙ্গনের গুঞ্জন আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে সর্বমহলে।
বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা দল থেকে পদত্যাগ করলেও তাদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি দলটি ৷ তাদের পদত্যাগ পত্র আপাতত গ্রহণ না করে ঝুলিয়ে রাখছেন তারা। কোনো না কোনোভাবে তাদের দলের সঙ্গেই রাখার কৌশল নিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা ৷
এক সপ্তাহে বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা পদত্যাগ করলেও এদের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি দলটি ৷
মোরশেদ খান, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিএনপি থেকে পদত্যাগের বিষয়টি এখন বেশ আলোচিত ৷ এদের মধ্যে দুজন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন ৷ তবে আরিফুল হকসহ সিলেটের চার বিএনপি নেতা যুবদলের কমিটি গঠনের দ্বন্দ্বে পদত্যাগ করেছেন ৷ আরিফ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আশীর্বাদপুষ্টদের কাছে হেরে যাওয়ার পর পদত্যাগ পত্র জমা দেন ৷
বিশ্লেষকরা মনে করেন বিএনপির দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না আসায় হতাশায় ভুগছেন নেতাকর্মীরা, সেই সাথে সাম্প্রতিক অন্তঃকোন্দল, অনিয়ম ও দলীয় দুর্নীতি বেড়ে গেছে । এর ফলেই তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে মনে করেন তারা।
দলের এমন অবস্থায় কোথায় আছেন তারেক রহমান? এমন প্রশ্ন করছেন অনেকেই।
বিএনপি আজ ডুবতে বসেছে, দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের পদত্যাগ সহ নানা সমস্যা প্রকটাকার ধারন করছে দলে। দলের এমন পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের প্রয়োজন ছিল সবার আগে, কিন্তু কোথায় তিনি? কোথায় সেই ঈদের চাঁদ?
বর্তমানে তারেক রহমান অবস্থান করছেন যুক্তরাজ্যে। গত ১১ বছরের বেশি সময় তারেক রহমান স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন লন্ডনে। তিনি সেখান থেকেই স্কাইপের মাধ্যমে কলকাঠি নাড়াচাড়া করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এমন একটা দলকে এত দূর থেকে বসে পরিচালনা করা আদৌ কি সম্ভব?
২০০৭ সালে যখন বাংলাদেশে একটি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল, তখন তারেকের বিরুদ্ধে অনেকগুলো দুর্নীতির মামলা যুক্ত হয়। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পুরোনো মামলাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয় ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলাসহ আরও বেশ কিছু মামলা।
এসব মামলার মধ্যে তিনি তিনটি মামলায় দণ্ড পেয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতেই বাংলাদেশের আদালতে এসব মামলার বিচারে তার সাজা হয়। এখন বাংলাদেশে ফিরলে তাকে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন “দলের প্রধান যখন দল ছেড়ে এত দূরে অবস্থান করে দলের কলকাঠি নাড়াচাড়া করেন, সেই দলের ভবিষ্যৎ চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়।“