শনিবার , নভেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) স্বীকৃতি পেল  বিখ্যাত মিষ্টি কাঁচাগোল্লা

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) স্বীকৃতি পেল  বিখ্যাত মিষ্টি কাঁচাগোল্লা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল নাটোরের  বিখ্যাত ঐতিহাসিক মিষ্টি কাঁচাগোল্লা।  বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট শিল্প নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদফতরের মহাপরিচলক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত জিআই সনদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৯ মার্চ তৎকালীন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ কাঁচাগোল্লাকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করেন। আর শিল্প মন্ত্রণালয় গত ৮ আগস্ট সনদ প্রদান করে।

জনশ্রুতি আছে, প্রায় আড়াইশ বছর আগে নাটোর শহরের লালবাজার এলাকার মধুসূদন পালের দোকান ছিল প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান। এই দোকান থেকেই নাটোরের রাজ পরিবারে মিষ্টি সরবরাহ করা হতো। মধুসূদন পাল প্রতিদিন এসব দেড় থেকে দু’মণ ছানা দিয়ে বিভিন্ন রকমের বাহারি মিষ্টি তৈরি করতেন। দোকানে কাজ করতেন ১০ থেকে ১৫ জন কর্মচারী। হঠাৎ একদিন অসুস্থতার কারণে দোকানে মিষ্টি তৈরির কারিগর না আসায় চরম বিপাকে পড়েন তিনি। রাজ পরিবারে মিষ্টি সরবরাহ করা হবে কিভাবে। মধুসূদনের চিন্তায় পড়ে গেলেন কে বানাবে মিষ্টি। এত ছানা দিয়ে এখন কী হবে? আর রাজ পরিবারে মিষ্টি কিভাবে সরবরাহ করা হবে, চিন্তায় তিনি অস্থির। ছানা নষ্ট থেকে রক্ষা করতে ছানাতে চিনির রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে রাখতে বলেন। এরপর তিনি মুখে দিয়ে দেখেন চিনি মেশানো ছানার দারুণ স্বাদ হয়েছে। এরপরে এই মিষ্টি রাজ পরিবারেও ভীষণ প্রশংসিত হল। এক পর্যায়ে তিনি ভাবেন যে, ছানাকে জ্বাল দিয়ে চিনির রসে ডোবানোর পর তার নাম করণ হয়েছে রসগোল্লা। আর কাঁচা ছানার রসে ডোবানো হয়েছে বলেই এর নাম দেওয়া হলো কাঁচাগোল্লা। ধীরে ধীরে মিষ্টি প্রেমিরা এই মিষ্টির প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকেন। তখন থেকে মধুসূদন নিয়মিত এই মিষ্টি তৈরি করতে শুরু করেন। কাঁচাগোল্লার সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুধুসূদন পালের দোকানে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন মণ ছানার কাঁচাগোল্লা তৈরি হতো।

জয়কালী মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী  প্রভাত কুমার পাল বলেন, আমার পূর্ব পুরুষরা সেই সময় থেকে কাঁচাগোল্লা তৈরি করে আসছে। তাদের এ কর্ম ধরে রাখতে আজও আমরা কাঁচাগোল্লা তৈরি করছি। সারা দেশে কাঁচাগোল্লার সুনাম ও খ্যতি রয়েছে। আজ আমাদের কাঁচাগোল্লা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা যারা এ পেশার সঙ্গে রয়েছি সকলে অনেক খুশি।

সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম নান্টু জানান, জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আশ্বস্ত হলাম। এখন থেকে আর কেউ যেকোনো মিষ্টি কাঁচা গোল্লার নামে বিক্রি করতে সাহস পাবে না।

সুধী মিষ্টূন্য ভান্ডারীর স্বত্বাধিকারী পলাশ কুমার ঘোষ জানান, অনেক বহুজাতিক কোম্পানি কাঁচা গোল্লার নামে নানা ধরনের মিষ্টি বিক্রি করে এতে নাটোরের কাঁচা গোল্লার সুনাম নষ্ট হয়। জি আই নিবন্ধন পাওয়ায় কেউ আর এটি করতে সাহস পাবে না।

নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, নাটোরের ঐতিহ্যবহনকারী জনপ্রিয় পণ্য কাঁচাগোল্লা এখন জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা অনেক গর্বিত। ভবিষতে এ পণ্যকে আরও বিশ্বব্যাপী আরও প্রসার ঘটাতে চাই। সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের  প্রয়োজন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও দেখুন

লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক লালপুরে,,,,,,,, নাটোরের লালপুরে বিএনপির মতবিনিময় ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২২ নভেম্বর ২০২৪) …