সারা দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চলছে ভেজালবিরোধী অভিযান। অনিয়ম ও প্রতারণার দায়ে অভিযানে দায়ী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে।
অভিযানের অংশ হিসেবে নোয়াখালী মাইজদীতে ভাড়া বাসায় চেম্বার খুলে চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ নাজমুল হুদা নামে এক ভুয়া ‘এমবিবিএস’ ডাক্তারকে ৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া নানা অনিয়ম পাওয়ায় প্রাইম হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিককে দুই লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদী এলাকায় উকিল পাড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে এস.এম.নাজমুল হুদা (৩৯) নিরাময় হাসপাতালের সামনে থেকে আটক করে আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী আকসা গার্ডেন বাসার তিন তলায় সাক্ষীদের উপস্থিতিতে চিকিৎসা চেম্বারে তল্লাশি করা হয়। এসময় তার নামীয় চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র ও চিকিৎসা প্রদানের যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়।
এস এম নাজমুল হুদা তার নামীয় ব্যবস্থাপত্রে ডাক্তারের নাম -পদবী-ডিগ্রী ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয় ও তিনি অপরাধ স্বীকার করেন। মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ২৮ ধারায় ৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে নোয়াখালী জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে প্রাইম হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান। হাসপাতালের
শয্যা অনুযায়ী ডাক্তার না থাকায়, অপারেশন থিয়েটার অপরিচ্ছন্ন, ফার্মেসিতে
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, ফার্মেসির ফ্রিজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সঠিক মাত্রা
না পাওয়া, হাসপাতাল ক্যান্টিনের অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতা অপরাধ আমলে নেওয়া
হয়।
মেডিক্যাল প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি (নিয়ন্ত্রণ)
অধ্যাদেশ ১৯৮২, ওষুধ আইন ১৯৪০, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর বিভিন্ন
ধারায় ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
এদিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফ্রেশ- এর মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যে মেয়াদ বাড়িয়ে বাজারজাত করণের অভিযোগে ফ্রেশ পণ্যের ডিলারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কুলাউড়া পৌরশহরের উত্তরবাজারে ফ্রেশ পণ্যের ডিলার সাইফুদ্দিন এন্ড ব্রাদার্স নামের প্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. সাদি-উর রহিম জাদিদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মেয়াদোত্তীর্ণ ফ্রেশের পণ্যের মেয়াদ বাড়ানোর অভিযোগে ডিলার ও সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ বলেন, গোপন সংবাদে খবর পেয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ রকম জালিয়াতি বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।