ভূমি সংশ্লিষ্ট সব সেবা নিশ্চিত করতে আসছে ‘হটলাইন কল সেন্টার’। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা মাঠ পর্যায়ে থেকেই যে কোন ধরনের সেবার জন্য সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবেই ভূমি অফিসের সব অনিয়ম-দুর্নীতি দূর হবে। বন্ধ হবে সাধারণ মানুষের হয়রানি, দুর্ভোগ। কল সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এজন্য বিটিআরসি থেকে শর্টকোড নম্বরও পাওয়া গেছে।
জমি নিয়ে মানুষের হয়রানি-দুর্ভোগের চিত্র অনেক পুরনো। ভূমির কাগজপত্র ঠিক করা, ভূমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া, বণ্টননামা, খারিজ ইত্যাদি কাজে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম-দুর্নীতি অনেকটাই ‘ওপেন সিক্রেট’। এসব কাজে অতীতে দুর্ভোগের শিকার হননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ইতোমধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়কে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনা হয়েছে। হয়রানি বন্ধের সর্বশেষ উদ্যোগ হটলাইন কল সেন্টার। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এই কল সেন্টার চালু হলে ভূমি অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতির কোন সুযোগ থাকবে না। প্রযুক্তির সব ধরনের সহায়তা সুবিধা সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
হটলাইনে নেয়া হবে অভিযোগ ও পরামর্শ। দেয়া হবে দরকারি সেবা। ভুক্তভোগী ভূমি মালিকদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করে কল সেন্টারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক তা সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সঙ্গে ভূমি সেবা পৌঁছে দেয়া হবে সর্বসাধারণের দোরগোড়ায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ভূমি বিষয়ে অভিজ্ঞ ৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল সেন্টারের দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে পাঁচ কর্মকর্তা থাকবেন ফোন রিসিভ করার দায়িত্বে। হটলাইন কল সেন্টারে একই সঙ্গে ত্রিশটি ফোন রিসিভ করার সুযোগ থাকবে। কল সেন্টার স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাইজেশনের অংশ হিসেবে স্থাপন করা হচ্ছে এই কল সেন্টার। ইতোমধ্যে এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের সহায়তায় ই-মিউটেশন বা ই-নামজারির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে। ভূমিমন্ত্রী ও সচিব প্রতিটি জেলার বিভিন্ন বিভাগের ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তদারকি করছেন, দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা।
ইতোমধ্যে এটুআই প্রকল্পের সহায়তায় ৩ কোটি ১০ লাখ ১৭ হাজার সিএস ও আরএস খতিয়ান অনলাইনে ডেটাএন্ট্রি করেছে। এসব খতিয়ান সাধারণ মানুষ যাতে অনলাইনে দেখতে পান সেজন্য এটুআই প্রকল্প থেকে নাগরিক কর্নার আনা হয়েছে। এছাড়া ই-নামজারি, আরএস খতিয়ান, সিএস ও এসএ খতিয়ান অনলাইনে ফি জমা প্রদান সাপেক্ষে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য একটি পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি করে দিয়েছে।