নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলি: পেঁয়াজের সংকট ও দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার খোড়া অজুহাত দেখিয়ে পুর্ব ঘোষণা না ছাড়াই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। আর এদিকে হিলি স্থলবন্দর পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ বাড়তে শুরু করেছে। ওদিকে ভারত হিলি সীমান্তে আটকা পড়ে যায় দেড় শতাধিক পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক সহ ১০হাজার মেট্রিক টন এলসি করা পেঁয়াজ। এদিকে পেয়াঁজ আমদানির ব্যপারে ভারতীয় রফতানি কারকেরা সে দেশের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার টেবিলে বসলেও পেঁয়াজ আমদানির ব্যপারে কোন নিশ্চিয়তা পাচ্ছেন না হিলি বন্দরের আমদানি কারক ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পন্য আমদানি রফতানি স্বাভাবিক থাকলেও আমদানি হচ্ছে না ভারতীয় পেঁয়াজ। হঠাৎ করেই সে দেশের সরকার ১৪ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। থমকে যায় পেঁয়াজের পাইকারি আর খুচরা বাজার। এদিকে ১৯ সেপ্টেম্বর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১১ ট্রাকে ২৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশের পর পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। পেঁয়াজ আমদানির কোনই সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় পাইকারি বাজারে দু’দিনের ব্যবধানে ভারতীয় ভালো মানের পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায় এবং দেশী পেঁয়াজ ১০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে একটু খারাপ মানের ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পাল্লাদিয়ে বাড়ছে দেশী পেয়াজের দাম। তবে অতিরিক্ত পঁচে যাওয়া পেঁয়াজের প্রতি ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকায়। দুগন্ধ ছড়ায় অতিষ্ঠ পথচারী ও এলাকাবাসী।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানি কারক গ্রুপ এর সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, পেঁয়াজ গুলো অতি তাপমাত্রা, গরম ও বৃষ্টিতে ভিজে পেঁয়াজ গুলো পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি ট্রাকের ৭৫ শতাংশ পেঁয়াজ পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে । এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়েছে পেঁয়াজ আমদানি কারকরা।
প্রতিবছর চাহিদা থাকায় দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে ২ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করে থাকেন হিলি আমদানিকারকরা। চলতি বছরের ৬ জুন থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৩ মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও বন্যা ও উৎপাদন সংকট দেখিয়ে হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। বারংবার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তে পুজি হারাতে বসেছেন হিলির আমদানিকারকরা, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা।
হিলি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি কারকদের আড়ত গুলোতে পেঁয়াজ আছে কিন্তু তারা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন না বললেই চলে। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম হলেও দেশের পাবনা থেকে পিয়াজ এনে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করায় ক্রেতারা ভারতীয় পেঁয়াজ না কিনে এখন দেশী পেঁয়াজের উপর নির্ভরশিল হয়ে উঠেছে।
কথা হয় পেঁয়াজ ক্রেতার সাথে, তারা জানান, দেশী পেঁয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারতীয় পেঁয়াজের দামা। দেশী পেঁয়াজের মান ভালো হওয়াই তারা ভারতীয় পেঁয়াজ কিনছেন না।