নিউজ ডেস্ক:
সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচীকে সর্বোত্তম বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করে এবারের বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করেছে সরকার। এ কর্মসূচীকে প্রাধান্য দিয়ে গত অর্থবছরে ছিল ২০২১-২০২২ অর্থবছরের উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৪৫ হাজার। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ১২ লাখ ৫৪ হাজারে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়বে ২ লাখ ৯ হাজার। এ খাতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মোট ১ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর আওতাভুক্ত বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি কার্যক্রমে এবং দারিদ্র্য নিরসন কর্মসূচীর আওতায় পল্লী ও শহর সমাজসেবা কার্যক্রম, এসিডদগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে শতকরা ৫০ ভাগ নারী এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুস্থ মহিলা ভাতা এবং পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রমে শতকরা ১০০ ভাগ নারী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রমগুলোতে নারীর অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক থাকায় এগুলো বার্ষিক গড়ে ১.২০ লাখ নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষা বৃদ্ধি, আত্ম-কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তি, আয়বর্ধক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, নিজস্ব পুঁজি এবং সরকারী সম্পদ ও সেবা লাভের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে। সামাজিক অপরাধপ্রবণ নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছয়টি কেন্দ্রের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ভরণ-পোষণ, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতিম শিশুদের খোরাকি ভাতা জানুয়ারি ২০২২ থেকে ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে মাসিক জনপ্রতি চার হাজার টাকা হারে দেয়া হয়েছে। শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত বিপন্ন শিশুদের সেবা প্রদান করে পরিবার বা নিকটাত্মীয় বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে পুনঃএকত্রীকরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে কেন্দ্রগুলোতে মোট ২ হাজার ২৯১ জন (১ হাজার ৮৮ জন ছেলে এবং ১ হাজার ২০৩ জন মেয়ে) শিশু অবস্থান করছে।
মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচী সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র গর্ভবতী মায়ের জন্য বিদ্যমান মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং শহর অঞ্চলের কম আয়ের ‘কর্মজীবী মায়েদের জন্য ল্যাকটেটিং ভাতা’ এ কর্মসূচী দুটিকে সমন্বিত করে ‘মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচী’ নামে বাস্তবায়ন শুরু করেছি। এ কার্যক্রম জীবনচক্রভিত্তিক সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় মাতৃগর্ভ থেকে শুরু করে শিশুর জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ এক হাজার দিনসহ চার বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে। এ ছাড়া মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, শীর্ণকায় ও খর্বকায় শিশুর সংখ্যা কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মূলত এ কার্যক্রম চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।