শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ভাঙ্গা-কুয়াকাটা রেলপথ নির্মাণ খরচ ৪২ হাজার কোটি টাকা

ভাঙ্গা-কুয়াকাটা রেলপথ নির্মাণ খরচ ৪২ হাজার কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। এতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় দাঁড়াবে ১৯৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৫১২ টাকা।

অর্থায়নের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয় ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার কাছে প্রস্তাব পাঠাবে।

প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। তৈরি হয়েছে রেলপথ নির্মাণের নকশা। এখন ফরিদপুরকে ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পাশাপাশি রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। ভাঙ্গায় তৈরি হবে রেল জংশন। ভাঙ্গা-কুয়াকাটা প্রকল্পের অর্থায়নের ব্যবস্থা হলে শুরু হবে দরপত্র আহ্বান, যাচাই-বাছাই, জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। এই রেলপথ নির্মাণের জন্য সাড়ে পাঁচ বছর সময় ধরা হয়েছে। ২০৩০ সালে ট্রেনে চড়েই কুয়াকাটা যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে রেলওয়ে।ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেলপথে থাকবে না কোনো লেভেলক্রসিং। সড়ক ও রেলপথের সংযোগ ঘটবে যেসব জায়গায়, সেখানে তৈরি করা হবে বক্স কালভার্ট। এতে করে বক্সের ভেতরে ট্রেন এবং নিচ দিয়ে সড়কপথে যান চলাচল করবে। এই রেলপথ হবে ব্রড গেজ। এতে ভবিষ্যতে যেন বৈদ্যুতিক ট্রেন চালানো যায়, সেই ব্যবস্থাও রাখা হবে। এই পথে সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ট্রেন চলতে পারবে—এমন পরিকল্পনায় কাজ করছে রেল কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা যাবে ট্রেন। পায়রা বন্দর ঘিরে রেলওয়ে অর্থনৈতিক জোন করতে চায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে এই প্রকল্পের অধীনে বরিশালেও রেলওয়ে মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ করা হবে। এই দুই জায়গাসহ এই পথে মোট ১৯টি বড় রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে। পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার নিচু জমিতে হবে উড়াল (ভায়াডাক্ট) রেলপথ। কালীগঙ্গা, আমতলী, আন্ধার মানিক, কীর্তনখোলা, পায়রাসহ মোট ১০টি নদীতে নির্মাণ করা হবে ৪৬টি বড় রেল সেতু। থাকবে ৪৪০টি বক্স কালভার্ট।

রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে। এখন মূল কাজ হচ্ছে টাকা কোথা থেকে আসবে, সেটা দেখা। এখন রেল মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটা ইআরডিতে পাঠাব। তারপর অর্থায়ন ও দরপত্র হবে।’

দরপত্র উন্মুক্ত হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আসলে অর্থায়নকারী দেশের চুক্তির ওপর নির্ভর করে। তবে যে দেশ অর্থায়ন করবে, সেই দেশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হবে। সে ক্ষেত্রে ভারত অর্থায়ন করলে ভারতের মধ্যে উন্মুক্ত দরপত্র হবে। চীন অর্থায়ন করলে চীনের মধ্যে উন্মুক্ত দরপত্র হবে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে দরপত্রের কাজ হবে। এখানে অর্থায়নকারী দেশ কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করে দেবে, সেই সুযোগ থাকবে না।’

ফরিদপুর-পটুয়াখালী রেললাইন সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন মামুনুল ইসলাম। রেলপথের দৈর্ঘ্যের চেয়ে ব্যয় অতিরিক্ত কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মূলত বরিশাল অঞ্চলে নিচু জমি অনেক বেশি। এ ছাড়া বড় নদীর সংখ্যাও বেশি। অনেক জমি উঁচু করতে হবে। উড়াল রেলপথ ও বড় বড় সেতুও নির্মাণ করতে হবে। এসব কারণেই ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।’

মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘রেল যোগাযোগের ফলে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে ওই অঞ্চল সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থার আওতায় আসবে। প্রথম পর্যায়ে এই পথে দিনে-রাতে দুটি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে। এতে ভ্রমণকারীরা রাতে ট্রেনে চড়ে সকালে কুয়াকাটা পৌঁছে যেতে পারবে।’

যদিও এই রেলপথটি প্রথমে ভাঙ্গা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত যাবে—এমন পরিকল্পনায় ১৯১ কিলোমিটার নকশা করা হয়েছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আরো ২৪ কিলোমিটার বাড়িয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এই রেলপথ সাত জেলাকে স্পর্শ করবে।

আরও দেখুন

বিএনপির সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ,,,,,,,,,,চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক …