নিউজ ডেস্ক : গত ৭ মাস ধরে দলের কোন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত না থাকার অভিযোগে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নতুন কমিটিতে জায়গা পাননি সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। আর তাই রাগ করে শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ এলডিপির বেশ কয়েকজন নেতা খুব শিগগির বিএনপিতে যোগ দেবেন বলে গুঞ্জন চাউর হয়েছে। সেলিম দল থেকে বের হয়ে গেলে এলডিপি ভাঙনের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে সেলিম সহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের বিএনপিতে যোগদান ঠেকাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এলডিপি। সেলিমদের দলে না জায়গা দিতে এরই মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে অনুরোধ করে চিঠিও লিখেছেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। দলের ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজনে সব দরজার কড়া নাড়তেও রাজি আছেন অলি। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এলডিপির এমন রাজনৈতিক দুর্দশার বিষয়ে জানা গেছে।
এলডিপির একটি সূত্র বলছে, দলে অনিয়মিত হওয়ায়, নিয়মিত মাসিক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি এবং জামায়াত প্রসঙ্গে অলির সাথে মতবিরোধের জেরে এলডিপির কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতেন না সেলিম। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তথা জামায়াতের মতো ঘৃণিত রাজনৈতিক দলের সাথে আঁতাত করায় অলির উপর চরম ক্ষিপ্ত হন সেলিম সহ দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা। তারা সন্দেহ করেন যে, অলি জামায়াতের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে তাদের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা করছেন। জামায়াতকে বাদ দিতে অলিকে একাধিকবার অনুরোধ করলে সেলিমদের সাথে দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে দলে অনুপস্থিতির অজুহাত দেখিয়ে সেলিমদের এলডিপির নতুন কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি।
সূত্রটি এও বলছে, এখন সেলিম ও অন্যান্য নেতারা যখন এলডিপি ছেড়ে বিএনপিতে যেতে চাচ্ছেন, ঠিক তখনই টনক নড়ে অলির। কারণ অলি জানেন, এলডিপিতে সেলিমদের অনেক অনুসারী রয়েছেন। সুতরাং সেলিম চলে গেলে জলের স্রোতের মতো দলটির কর্মীরা বিএনপিতে যোগদান করবেন। আর এটি হলে এলডিপি শুধু কাগজে কলমে রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকবে। তাই এলডিপির ভাঙ্গন রোধ করতে এবং সেলিমদের বুঝিয়ে দলে রাখতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন অলি। তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে চিঠিও দিয়েছেন, যেন এলডিপির কোন নেতাকে বিএনপিতে স্থান না দেয়া হয়।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন দেখার বিষয় হলো, এলডিপির ভাঙ্গন রোধে বিএনপি কি ধরণের সহায়তা করবে। নাকি জামায়াতকে বাগিয়ে নেয়ার শাস্তি হিসেবে অলিকে শায়েস্তা করবে বিএনপি। তবে অনেকেই মনে করছেন, বড় অঙ্কের বিনিময়ে অলির এলডিপির ভাঙ্গন রোধ করতে সহায়তা করতে পারে বিএনপি।