নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের সিংড়ায় সালাম বাহিনীর অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। জমি দখল, সুদী কারবার, মারপিট, মাদক চোরাচালানে সহযোগিতা, খুন, জখম সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সালাম বাহিনীর হুমকি, ধামকির কারনে সুলতান মাস্টারের পরিবার ও আতœীয় স্বজনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আ: সালাম বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট কৈগ্রামের সাধারণ জনগণ।
আ: সালাম নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের কৈগ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছোট ছেলে।স¤প্রতি তার বিরুদ্ধে কৈগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতান আহমেদ ও তাদের পরিবারের নামে ই-নামজারি ও দলিলকৃত কৈগাঁও মৌজার ৫০০ ও ৫০১ দাগে প্রায় ৩৫ শতাংশ জায়গা অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক সালাম বাহিনীর প্রাণনাশের হুমকির প্রেক্ষিতে গত ২৭/০৪/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে তার অপর তিন সহোদর ভাই বাবু, কুদ্দুস, সবুজ এবং তার ২ চাচা- মোস্তাফিজুর রহমান স্বপন ও মিজানুর রহমান এই ৬ জনের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিন ও সুত্রে প্রকাশ সহকারী শিক্ষক শিক্ষক সুলতান আহমেদ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এবং ১৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে উক্ত জায়গা বিষয়ে সবাইকে নিয়ে মাপজোঁকের দিন নির্ধারণ করলে দুই বারই অবৈধ দখলদার হিসেবে সালাম বাহিনী এসে গন্ডগোল, মারামারি, প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে এবং মাপজোঁক বন্ধ করে দেয়। সিংড়া থানার এ.এস.আই মোঃ আনোয়ার হোসেন তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব এ্যাডভোকেট সহ গত ২০ ও ২৭ এপ্রিল তারিখে সিংড়া থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু আ: সালাম, তার বাহিনীর সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান থানায় উপস্থিত হন নাই।
স্থানীয়রা জানায়, আ: সালাম নিজে মাত্র আধা শতাংশ সম্পত্তির মালিক হয়ে ঐ ২ দাগে ১৭২ শতাংশের মধ্যে ১৩৩.৭৫ শতাংশের মালিক সুলতান মাস্টার ও তার পরিবারের সম্পত্তি মাপজোঁক করতে বার বার বাধার সৃষ্টি করছে। তারা কোন সময়ই তাদের দলিল, ই-নামজারি, ভ‚মি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা কিছুই বের করেনা। যখনই তারা দলিল প্রদর্শন করবে তখন থেকেই তাদের উক্ত জায়গার মালিকানার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয়রা আরো জানান, আ: সালামের কৈগাঁঁও মৌজার ৫২, ৩২২ খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত ৫০০ ও ৫০১ দাগের সম্পত্তির কোন বৈধ দলিল নেই। গত ১৮ মে তারিখে সুলতান আহমেদ রাঃ খাজুরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য জনাব মোঃ আব্দুল মান্নান ও ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা কোনো সমাধানের পথ বেছে না নিয়ে গত ২৩ মে ‘২৪ তারিখ সকালে আ: সালামের নেতৃত্বে মোস্তাফিজুর রহমান স্বপন ও তার লোকজন উক্ত জায়গায় স্থায়ী বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করে।
সুলতান আহমেদ বিষয়টি জানতে পেরে সিংড়া থানায় স্থায়ী বেড়া নির্মান বন্ধের লিখিত আবেদন করেন। সিংড়া থানা তৎক্ষনাত ঘটনাস্থলে এস.আই আশীষ কুমার সান্যালের নেতৃত্বে পুলিশ পাঠায়। পুলিশ গিয়ে এ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রকার স্থায়ী বেড়া, স্থাপনা করতে উভয় পক্ষকে নিষেধ করেন এবং স্থায়ী বেড়া দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেয়।
অভিযোগ উঠেছে, আ: সালাম বাহিনী একই মৌজার ৪৬৩ ও ৪৬৪ দাগে আবুল হোসেনের ২০ শতাংশ জায়গা দখল করে তার নিজ বাড়ী নির্মান ও পুকুর খনন করেছে। ভ‚মিদস্যু সালাম বাহিনী কৈগ্রামের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতাউর রহমানের নিজ নামে নামজারিকৃত ৫০৮ দাগে প্রায় ৯ শতাংশ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে। সে উত্তর কৈগ্রাম হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও কৈগ্রাম শাহী মসজিদের জমির লীজের টাকা আতœসাৎ করেছে। উত্তর কৈগ্রাম “জান্নাতুল মাওয়া” কবরস্থানের কয়েকটি বড় বড় মেহগনি গাছ কেটে নিয়ে তার বাড়ীর দরজা, জানালা বানিয়েছে।
গত ২০০৯ সালে জুলাই মাসে ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি মোঃ ইদ্রিস আলীকে লোহার রড দিয়ে মেরে গুরুতর জখম করে।
পুকুর ইজারা না দেওয়ার কারনে উত্তর কৈগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম আ: সালামের হাতে অফিস কক্ষে মারপিটের শিকার হন।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আ: সালাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।