নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম:
নাটোরের বড়াইগ্রামে চান্দাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবায়েদুল হককে লাঞ্চিত করার ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ দেখা দিয়েছে। বুধবার দুপুরে ওই প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করলে বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতার নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশ। বৃহস্পতিবার সেই আওয়ামী লীগ নেতাকে ভূয়া দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আরেকাংশ। বড় ধরনের সংঘাতের সঙ্কা দেখা দিয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সামসুজ্জামান গোলাম বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াদুদ সরকারকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আওয়ামীরীগের বিদ্রোহী আনিসুর রহমান খেচু এই মামলা করিয়েছেন। চান্দাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গীস্মকালীন ফুটবল খেলা নিয়ে দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। ওয়াদুদ সরকার সেই দ্বন্দ নিরসন করতে যায়। সেখানে প্রধান শিক্ষকের সাথে ওয়াদুদ সরকারের কথা কাটাকাটি হয়। প্রধান শিক্ষক নিজেই বলেছে তাকে কেউ মারপিট করে নাই। অথচ তিনি মারপিটের অভিযেগ করে মামলা করেছেন। এসময় বক্তৃতা করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক মুজিবুর রহমান মাষ্টার, যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা, হায়দার আলী প্রমূখ।
প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার এড়াতে নিজেকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দাবী করার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আরেকাংশ। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ইসরাইল হোসেন, প্রচার সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নিখিল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক, সদস্য আমিনুল ইসলাম বকুল প্রমূখ।
চাঁন্দাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত সোমবার আওয়ামী লীগে চিহ্নিত অনুপ্রবেশকারী জামায়াত নেতার ভাই ওয়াদুদ সরকার চাঁন্দাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদ ওবায়দুল হককে স্কুল মাঠে লাঞ্চিত করেন। এঘটনায় মঙ্গলবার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ওয়াদুদ সরকারের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ করেন এবং প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার ওয়াদুদ সরকার কিছু ভাড়াটিয়া দিয়ে নিজেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দাবী করে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন করান। তাই তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার এবং ভূয়া পদবী ব্যবহারের অপরাধে দলীয় শাস্তির দাবী জানান ফরিদুল।
সামসুজ্জামান গোলাম বলেন. গত উপজেলা নির্বাচনে যারা নৌকা প্রতিকের সমর্থন করেছিল তাদেরকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়ছিল। পরে আমরা কমিটি গঠন করি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে রাজনৈতক বৈঠকে মাধ্যমে আমাদের কমিটিকে বৈধ ঘোষনা করে সম্মেলনের ভোটার তালিকায় অন্তভুক্ত করা হয়। ওয়াদুদ সরকার সেই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী বলেন, গত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সামসুজ্জামান গোলামকে সভাপতি হিসেবে ভোটার ছিলেন।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক বলেন, যেকোন প্রকার অপ্রিতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় চাঁন্দাই বাজারে নিয়মিত পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সাথে ওয়াদুদ সরকারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।