নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম:
নাটোরের বড়াইগ্রামে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কের নেতৃত্বে উপজেলা যুবলীগের ব্যানারে পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বড়াইগ্রাম পৌর চত্তরে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম জোয়াদ্দারের নেতৃত্বে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী এবং বনপাড়া পৌর চত্বরে আহ্বায়ক জুলফিকার মতিনের নেতৃত্বে আয়োজিত সভায় মেয়র কেএম জাকির হোসেন বক্তব্য রাখেন।
এদিকে, কোন আলোচনা না করে উপজেলা যুবলীগের নাম ব্যবহার করে পৃথক কর্মসূচি দেয়ায় দুই যুগ্ম আহ্বায়ককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠা হলেও অদ্যাবধি উপজেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠণ করা হয়নি। ২০১৩ সালে জুলফিকার মতিনকে আহ্বায়ক, শ্রী মোহিত কুমার সরকার ও আবুল কালাম জোয়াদ্দারকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠণ করা হয়। কিন্তু এক যুগ পার হলেও এ আহ্বায়ক কমিটি পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি।
ইতিমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভাগুলোতে আহ্বায়কের নেতৃত্বে একটি এবং দুই যুগ্ম আহ্বায়কের নেতৃত্বে পৃথক পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি উপ-নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর অনুসারী দুই যুগ্ম আহ্বায়ক ও আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেনের অনুসারী আহ্বায়কের মধ্যে এ দ্বন্দ আরো প্রকাশ্য রুপ লাভ করেছে। পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের মাধ্যমে এ বিরোধ আরো প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে।
বড়াইগ্রাম পৌরসভা চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহিত কুমারের সভাপতিত্বে ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম জোয়াদ্দারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিক, আবুল কালাম আজাদ ও আইয়ুব আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন দুলাল, চান্দাই ইউয়িন আওয়ামীলীগ সভাপতি শামসুজ্জামান গোলাম, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম বাবর, জাকির সরকার, নাহিদ পারভেজ, জুলফিকার আহমেদ মিঠু প্রমূখ।
অপরদিকে, বনপাড়া পৌর চত্বরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জুলফিকার মতিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বক্তৃতা করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী, সম্পাদক এ্যাড. মিজানুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আতাউর রহমান। তবে দুটি অনুষ্ঠানেই জেলা যুবলীগের সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া উদ্বোধক ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বলে দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত তারা কোন অনুষ্ঠানেই অংশ নেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম জোয়াদ্দার বলেন, আহ্বায়ক জুলফিকার মতিন গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে চশমা প্রতীকের নির্বাচন করার কারণে তাকে জেলা যুবলীগ বহিষ্কার করেছে। সেই থেকে তিনি রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন না। মেয়র জাকির নিজ স্বার্থে তাকে ব্যবহার করছেন। বহিষ্কৃত আহ্বায়কের দেয়া নোটিশের জবাব দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না।
তবে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জুলফিকার মতিন বলেন, আমাকে বহিষ্কারের বিষয়টি সঠিক নয়। এমন কোন চিঠি আমি কখনও পাইনি। তারা উপজেলা যুবলীগের পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠানের বাইরে একই সময়ে একই ব্যানারে আরেকটি কর্মসূচি দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এ কারণে দু’জন যুগ্ম আহ্বায়ককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর নেতাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা যুবলীগের সভাপতি বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া বলেন, আলাদা ভাবে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাদের অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।