নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম:
নাটোরের বড়াইগ্রামের জোয়াড়ী ইউনিয়নে লোকাল গভার্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্টের (এলজিএসপি-৩) আওতায় তিনটি রাস্তা সিসি ও এইচবিবিকরণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা আপত্তি জানালেও সংশ্লিষ্টরা তা উপেক্ষা করে ইচ্ছেমত কাজ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের এলজিএসপি-৩ এর আওতায় জোয়াড়ী আব্দুস সালামের বাড়ি হতে সেলিমের বাড়ি অভিমুখে রাস্তা সিসি করণ কাজ চলছে। ২৮৫ ফুট ফুট দৈর্ঘ্য এ রাস্তাটির জন্য মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জোয়াড়ী বাজারের নয়নের দোকান হতে সরদার পাড়া মতিউরের বাড়ি অভিমুখে রাস্তা এইচবিবিকরণ এবং কেল্লা খলিল মোল্লার বাড়ি হতে হযরত আলী মন্ডলের জামে মসজিদ অভিমুখে রাস্তা সিসিকরণ কাজও চলছে। এ দুটি রাস্তা নির্মাণে তিন লাখ টাকা করে মোট ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্তা তিনটি করার ক্ষেত্রে ওয়ার্ক অর্ডার না মানা ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি রাস্তার কাজ শেষ হলেও অপর দুটি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। এসব রাস্তায় ব্যবহার করা এবং রাস্তার পাশে জমানো ইটের সবগুলোই দুই ও তিন নম্বর ইট। এসব ইটের অধিকাংশগুলোতেই রয়েছে রেইন স্পট (বৃষ্টির দাগ)। তিনটি রাস্তাতেই নাম মাত্র বক্স কাটা হয়েছে। সাব বেইজ পর্যায়ে ৬ ইঞ্চি পরিমাণ বালু দেয়ার কথা থাকলেও যে বালু দেয়া হয়েছে তার পরিমাণ কোনক্রমেই এক ইঞ্চির বেশি হবে না। ইটের সোলিং পর্যায়ে প্রতিটি ইটের মধ্যে ২-৩ ইঞ্চি পরিমাণ ফাঁক রয়েছে। পরে বালু দিয়ে ফাঁকা জায়গাগুলো পূরণ করে তার উপরে ইটের আরেকটি স্তর দেয়া হয়েছে। এভাবে নীচের ফাঁকা অংশগুলো ঢেকে দেয়া হয়েছে।
এ সময় কাজে নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা জানান, রাস্তার কাজে ব্যবহৃত ইটগুলো সত্যিই নিম্নমানের। হাল্কা আঘাতেই এগুলো ভেঙ্গে যায়। চেয়ারম্যানের লোক যা দিয়েছে, তাই দিয়েই আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রে আমাদের কিইবা করার আছে।
জোয়াড়ী বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাস্তায় যৎসামান্য বক্স কেটে হাল্কা ভাবে বালু ছিটিয়ে তার উপর ফাঁক ফাঁক করে ইট দেয়া হয়েছে। এ রাস্তা কয়দিন যায়, সেটাই দেখার বিষয়।
কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা রেজাউল করিমের কাছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে কিছু করার দরকার নাই ভাই, আমি বাইরে আছি। এলাকায় এসে আপনাদের সাথে বসে সব ঠিক করে দেবো।
জোয়াড়ী ইউপি চেয়ারম্যান চাঁদ মাহমুদ বলেন, আমার কাছে এসব ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। আমার জানা মতে কাজ ভাল হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ নাটোরের উপ-পরিচালক গোলাম রাব্বী জানান, এ বিষয়ে আমি আগে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।