নিউজ ডেস্ক:
নাকে ব্যবহার উপযোগী করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে দেশি কোম্পানি ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড; সঙ্গে থাকবে ব্রিটিশ বায়োমেডিকেল কোম্পানি ভিরাকর্প।
টিকা তৈরির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের কোম্পানিটির সঙ্গে চুক্তি সই হওয়ার কথা জানিয়েছেন ইনসেপটা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির।
শনিবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন গবেষণা করে ‘মেটেরিয়ালটা’ বানাব। এরপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে। আপাতত এটুকুই আপডেট।”
এ টিকা উৎপাদনের যৌথ উদ্যোগের খবর দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন।
ল্যাঙ্কাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট ও ভিরাকর্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুনিরের গবেষণার উপর ভিত্তি করে এ টিকা তৈরি হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এটি ন্যাজাল স্প্রের (নাকে ব্যবহারের স্প্রে) সাহায্যে সহজে প্রয়োগ করা যাবে। প্রচলিত কোল্ডচেইন ব্যবস্থার মাধ্যমে টিকাটি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পরিবহন করা যাবে।
ড. মুনির বলেন, “এ টিকা সহজে পরিবহনযোগ্য এবং নাকের মাধ্যমে গ্রহণ করা যায়। এটি টিকাদান কর্মসূচির জন্য যে বড় অবকাঠামো ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়, তা কমিয়ে দেবে।
“বিশ্বের সবচেয়ে প্রত্যন্ত এলাকার অধিবাসীদের কাছেও এ টিকা সহজে পৌঁছানো যাবে।”
ইনসেপ্টার সঙ্গে এ অংশীদারিত্ব পরবর্তী প্রজন্মের কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদন সম্ভব করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা যে কোনো ধরনের সার্স কোভ-২ থেকে সুরক্ষা দেবে এবং এর বিস্তার প্রতিরোধ করবে।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে ইনসেপ্টা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তাদির বলেন, ইনসেপ্টা নতুন ভ্যাকসিন উৎপাদনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি অর্জন ও উন্নয়নের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
“এ যৌথ উদ্যোগের ফলে উন্নয়নশীল দেশ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণের জন্য সহজে প্রয়োগযোগ্য টিকা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।“
এর আগে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা বোতলজাতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হলে তাতে যুক্ত হয় ইনসেপ্টা।
গত ১৬ অগাস্ট চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে এনে বোতলজাতকরণ ও সরবরাহের জন্য যৌথ চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার ও ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক স্বাস্থ্যকর্মীর হাতে সিনোফার্মের করোনাভাইরাস টিকার একটি ভায়াল। চীনা এ কোম্পানির টিকা দেশে বোতলজাত করতে চুক্তি করেছে ইনসেপ্টা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
চুক্তির আওতায় চীন থেকে বাল্ক টিকা এনে বাংলাদেশে ভায়ালে ভরা এবং লেবেলিংয়ের কাজটি করবে ইনসেপ্টা। তাদের কাছ থেকে সরকার সেই টিকা কিনে নেবে।
বর্তমানে বার্ষিক ১৮ কোটি একক ডোজ বা ১০০ কোটি মাল্টি ডোজ টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে কোম্পানিটির বলে জানিয়েছে ইনসেপ্টা।
এর বাইরে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার নতুন ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ দেশে তৈরি করতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করেছে ইনসেপ্টা।
এটি ছাড়াও বেশ কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি দেশেই মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ তৈরির জন্য গত নভেম্বরের প্রথম দিকে আবেদন করেছে।
ইনসেপ্টা ছাড়া দেশে টিকা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আরেক দেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। ইতিমধ্যে কোম্পানিটির উদ্ভাবিত টিকা ট্রায়ালের কয়েকধাপ পেরিয়ে এখন মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের কার্যক্রম চালাচ্ছে।