শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / গুরুদাসপুর / ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চলনবিলের জেলে-মৎস্যজীবীরা

ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চলনবিলের জেলে-মৎস্যজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুরঃ
চলছে হেমন্তকাল। বইছে উত্তুরে হিমেল হাওয়া। সেই সাথে মৎস্য ভান্ডার খ্যাত উপমহাদেশের বৃহত্তর ঐতিহাসিক চলনবিলের পানি নামতে শুরু করেছে। বর্ষার এই শেষভাগে চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খালবিল ও জলাশয়ে এখন মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলে আর মৎস্যজীবিরা। কেউ নৌকায় করে আবার কেউ হাটু পানিতে নেমে নানারকম মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে ছোট-বড় নানা প্রজাতির মাছ শিকার করছেন। এবার দীর্ঘসময় বিলে পানি থাকায় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে চলনবিলের সুস্বাদু মাছ।

চলনবিলে প্রায় ৩৫ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। তার মধ্যে বোয়াল, শোল, পুঁটি, পাবদা, খলসে, শিং, বেলে, চিংড়ি, আইড়, কই, বাইমসহ বিভিন্ন সুস্বাদু মাছ উল্লেখযোগ্য। জেলেরা শেষ রাতে জাল ও নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে বিলে চলে যায়। সকাল অবধি তারা মাছ ধরে স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য আসে। আবার অনেকে বড়শি, খড়া জাল, ধর্মজাল, ঝাঁকিজাল, সোঁতি ও বাদাইজাল দিয়ে মাছ শিকার করে। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ঝাঁকে ঝাঁকে এসব মাছ ধরছেন জেলেরা। চলনবিলের মাছ ছাড়া স্থানীয় ব্যবসা বন্দর চাঁচকৈড়, মহিষলুটিসহ বিভিন্ন আড়তে মাছের বাজার জমে উঠে না।

গুরুদাসপুরের বিলসা গ্রামের জেলে আফজাল এবং ভাদু হোসেন বলেন, মাছ ধরেই চলে আমাদের জীবন জীবিকা। তাই খেয়াজাল, জাকই জাল, ধুন্দি, চাঁই, দোয়ার, পলো, বর্ষিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করে মাছ ধরছি।

মৎস্যজীবী আবুল কালাম বলেন, এবার চলনবিলে মাছের অভাব নেই। এতে জেলেরা যেমন মাছের ভাল দাম পাচ্ছে, তেমনি স্থানীয় মানুষের আমিষের চাহিদাও মিটছে এবং উদ্বৃত্ত মাছ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নওগাঁ জেলার ৮টি উপজেলা নিয়ে চলনবিল অঞ্চল বিস্তৃত। এই বিলকে কেন্দ্র করে চাষিরা যেমন স্বপ্ন বুনে, তেমনি জেলেরা স্বপ্নের জাল বুনন করে। বিলকে কেন্দ্র করে শুধু চাষি ও জেলেরাই স্বপ্ন দেখে না, স্বপ্ন দেখে চলনবিলাঞ্চলের প্রতিটি মানুষ। দেশের অনেক মানুষ আশায় থাকে চলনবিলে উৎপাদিত ধান ও স্বাদু পানির নানা প্রজাতির মাছের জন্য। পর্যটন আকর্ষক হিসেবেও চলনবিলের নাম সর্বজনবিদিত।

বর্ষায় পানিতে টইটুম্বুর চলনবিল আর গ্রীষ্মে আবাদি জমি। ভরা বর্ষায় চলনবিল হয়ে ওঠে অনন্ত যৌবনা। অঢেল পানির মাঝে দেখা মেলে কৃষকের বোনা আমন-আউশ ধান। আর অথৈ পানিতে নৌকা ভাসিয়ে জেলেরা মাছ ধরে। এসময় অতিথি পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে চিরচেনা চলনবিল।

উল্লেখ্য, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক চলনবিলের বিখ্যাত কই মাছ খাওয়ার জন্য এ অঞ্চলে এসেছিলেন। এসব মাছ এলাকার স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ করার পর তা দেশের আনাচে-কানাচে পৌঁছে যায়। বর্তমানে চলনবিলের মাছ বিদেশেও রফতানির চেষ্টা চলছে। এছাড়া বিলের মধ্যেই গড়ে উঠেছে মাছ শুটকি করার খোলা। এই শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাত করে অসময়ে মাছের চাহিদা পূরন করা হয়।

আরও দেখুন

বিএনপির সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ,,,,,,,,,,চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক …