টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার বর্ষপর্তি উপলক্ষে শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেছেন এবং দেশবাসীকে তার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। তার সরকার গত এক বছরে শতভাগ সফল না হলেও চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেনি। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
একদিন পরই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ভাষণের মধ্যে যে ভরসা রাখতে বলেছেন, সেই ভরসা মানুষ কোত্থেকে রাখবে? অর্থনীতি চরমভাবে নিচে নেমে গেছে। তার ভাষণের মধ্যে অর্থনীতির যে বর্ণনা দিয়েছেন, বাস্তবে ঠিক উল্টোটা। সবগুলো ব্যাংক ভেঙে পড়েছে। মানুষ আস্থা রাখবে কোথায়?
সরকার প্রধানের বক্তব্যের সঙ্গে দেশের প্রধান বিরোধী দল একমত পোষণ করবে, তেমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে আমরা অনেক দূরে আছি। সরকারের ওপর ভরসা না রাখতে পারলে অন্যসব দেশে মানুষ বিরোধী দলের ওপর আস্থা রাখে। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা কী বলে? বিএনপির ওপর কি মানুষের আস্থা বাড়ছে? মির্জা ফখরুল যেমন প্রধানমন্ত্রীর ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না, তেমনি তার এবং তার দলের ওপরও কি ভরসা রাখা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে?
বিএনপির বর্তমান অবস্থা কি আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠার মতো? লেখার রসদ খুঁজতে গিয়ে বছর দেড়েক আগের একটি লেখা পেলাম। তখন বিএনপি নিয়ে যা লিখেছিলাম তা থেকে পরিস্থিতি খুব বদলায়নি।
“জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। আদালত তাকে জেল-জরিমানা দুটিই করেছেন। তিনি এখন কারাগারে আছেন। তিনি কবে নাগাদ জামিন পাবেন, তার জেলজীবন দীর্ঘ হবে কি না, তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না ইত্যাদি নিয়ে নানামুখী আলাপ-আলোচনা, জল্পনা-কল্পনা চলছে। আদালত কর্তৃক খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ায় তার রাজনৈতিক জীবন এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতি কোন পরিণতির দিকে যাবে – সে আলোচনাও রাজনৈতিক মহলে আছে। রাজনৈতিক পণ্ডিতরা নানারকম ভবিষ্যদ্বাণী করছেন। কেউ বলছেন, বিএনপি এক গভীর সংকটে পড়েছে, আবার কেউ বলছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ায় বিএনপির লাভ হয়েছে।
বিএনপির একজন শীর্ষনেতা তো বলেছেন, তাদের নেত্রীকে জেলে নেওয়ায় প্রতিদিন নাকি আওয়ামী লীগের ৩০ লাখ করে ভোট কমছে। এ হিসাব কীভাবে করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। যদি এ বক্তব্য সত্য বলে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে এক মাসের মধ্যে দেশে আওয়ামী লীগের আর কোনো ভোট থাকবে না, সব ভোট বিএনপির হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বিএনপির তো উচিত খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে দেওয়া! খালেদা জিয়া জেলে থাকলে আওয়ামী লীগ শেষ।
না, আমাদের মনে হয় না এটা কোনো সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক বক্তব্য। এটা একটি মেঠো বক্তব্য এবং এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয় মূলত কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙা করার জন্য এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘাবড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এ ধরনের অন্তঃসারশূন্য বক্তব্য বাস্তবে উল্টো ফল দেয়। কর্মী-সমর্থকরা নেতাদের ফালতু কথা শুনে শুনে একপর্যায়ে তাদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন। আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষেরও বুঝতে বাকি থাকে না যে, ‘শূন্য কলসি বাজে বেশি’। খালেদা জিয়ার শাস্তি হলে এবং তাকে কারাগারে নেওয়া হলে দেশে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হবে বলে যারা আশঙ্কা করেছিলেন, তারা এখন পরিস্থিতি দেখে হতাশ হয়েছেন। তারা এখন ঘুরিয়েফিরিয়ে বলছেন, রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হলো। সমঝোতার দুয়ার বন্ধ হয়ে গেল।
যারা এসব বলছেন, তারা আসলে রাজনৈতিক বাস্তবতা না বুঝেই শুধু সস্তা বাহবা পাওয়ার জন্য গালভরা কথা বলছেন। খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ায় রাজনৈতিক সংকটে নতুন মাত্রা যোগ হয়নি। এতে সংকট গভীর হওয়ার কোনো কারণ আমি অন্তত দেখি না। সংকট আগে থেকেই আছে, বছরের পর বছর ধরেই তা চলে আসছে। রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে যে ভাবনা কারও কারও মধ্যে দেখা যায়, তারও কোনো বাস্তব সম্ভাবনা দেশে বিরাজ করছে না। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে সংলাপ হওয়ার জন্য পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে বিএনপিরই। যারা আওয়ামী লীগ বা সরকারের ভূমিকাকে বড় করে দেখেন, তারা বিএনপির রাজনৈতিক ‘অপরাধ’গুলো বিবেচনায় নেন না। বঙ্গবন্ধুর অবমূল্যায়ন, ১৫ অগাস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন, ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা ইত্যাদি বিষয়ে বিএনপি আগের অবস্থানে থাকলে রাজনীতিতে সমঝোতার পরিবেশ তৈরি হবে না।
সরকার তথা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটা একাধিকবার স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা বা সংলাপ হবে না। সরকার চাপে থাকলে বা বেকায়দায় থাকলে সাধারণত বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার কোনো চাপে নেই, ক্ষমতায় থাকতে তাদের সামনে বড় রকমের কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। কাজেই খালেদা জিয়ার যদি শাস্তি না-ও হতো, তাহলেও আলোচনার সুযোগ তৈরি হতো বলে মনে হয় না।
খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পরও পরিস্থিতি যেমন শান্ত-স্বাভাবিক থাকলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিল, সেভাবে তাদের শক্তি প্রয়োগ করতে না হওয়ায় সরকার নিশ্চয়ই স্বস্তি অনুভব করছে। বিএনপি এখন ধীরে ধীরে জনমত গঠন করে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে জোরদার করে তুলবে বলে যারা মনে করছেন, তাদের হিসাবেও ভুল আছে। দেশে আর কোনো ইস্যুতে বড় গণআন্দোলন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যায় না। আন্দোলনের বারোটা বাজিয়েছে বিএনপি। সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের নামে বিএনপি যে সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও করেছে, মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে, পঙ্গু বানিয়েছে, সম্পদ ধ্বংস করেছে, তাতে দেশের মানুষের মধ্যে যে আন্দোলনভীতি তৈরি হয়েছে, সেটা সহজে কাটার মতো নয়। সরকারের প্রতি কিছু কিছু কারণে মানুষের ক্ষোভ-অভিমান আছে; কিন্তু সেজন্য বিএনপির প্রতি মানুষ ঝুঁকে পড়েছে – তেমনটা মনে করারও কোনো কারণ নেই। মানুষ সরকারের সমালোচনা করছে বলেই যারা মনে করছেন বিএনপির জনসমর্থন বাড়ছে, তারা সঠিক জনমনস্তত্ত্ব বুঝতে পারছেন বলেও মনে হয় না। আওয়ামী লীগের বিকল্প বিএনপি – এ সরল হিসাব বোধহয় রাজনীতিতে আর চলবে না।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনি জেলে গিয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক কারণে তাকে কারাগারে যেতে হয়নি। কাজেই তিনি জেলে গিয়েছেন বলেই তার প্রতি সহানুভূতি বাড়বে না। রাজনৈতিক কারণে জেলে গেলে সাধারণ মানুষের মনে যে সহানুভূতি তৈরি হয়, দুর্নীতির কারণে জেলে গেলে তা হওয়ার কথা নয়। বিএনপি যতই বলুক যে, সাজানো মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটা মানুষের কাছে পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য হবে বলে মনে হয় না ।
খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর লন্ডনে বসবাসকারী তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়ে বিএনপি খুব রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মনে হয় না। তারেক রহমান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হলেও তার সম্পর্কে পাবলিক পারসেপশন ভালো নয়। তাছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তারও ১০ বছরের সাজা হয়েছে। এর আগেও একটি মামলায় তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইনের চোখে তিনি পলাতক। খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফিরতে পারবেন বলে মনে হয় না। এমন একজন পতিত নক্ষত্রের ওপর দলের দায়িত্ব অর্পণ করে যারা মনে করছেন বিএনপি এখন আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হবে, তাদের ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগবে না।
খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর কোনো ধরনের হঠকারী কর্মসূচি না দিয়ে বিএনপি একদিকে যেমন রাজনৈতিক পরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছে, অন্যদিকে আবার তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান করে নির্বুদ্ধিতারও প্রমাণ রেখেছে। বিএনপির মতো একটি দল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চলবে – এটা কি হতে পারে? বিএনপির নেতৃত্ব জিয়া পরিবারের হাতছাড়া হলে দলটির দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই সম্ভবত খালেদা জিয়ার পর তারেক রহমানকে ‘ভারপ্রাপ্ত’ করা হয়েছে। দলের ঐক্য রক্ষার জন্য এটা করা হলেও বাস্তবে এতে অনৈক্যই বাড়বে বলে কারও কারও মনে হচ্ছে। দলের সিনিয়র নেতারা এখন মেনে নিলেও তারেকের খবরদারি কতদিন তারা স্বস্তির সঙ্গে মেনে নেবেন, সে প্রশ্নও আছে।
বিএনপি আশঙ্কা করছে, সরকার বিএনপি ভাঙার নীলনকশা করেছে। বিএনপি দুর্বল হোক – সরকার সেটা চাইতেই পারে। সরকার বিএনপি ভাঙার জন্য নেপথ্যে কলকাঠি নাড়লে নাড়তেও পারে। প্রশ্ন হলো, বিএনপি সরকারের ফাঁদে পা দেবে কি না? বিএনপি যদি খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে, তাহলে বিএনপিতে ভাঙন দেখা দেওয়া অনিবার্য হতে পারে। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে দলটি ভয়াবহ সংকটে পড়বে। দলের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে। কিছু নেতাকর্মী ধৈর্যচ্যুত হয়ে দলত্যাগ করতে পারেন। কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতিতে বিএনপি যদি নির্বাচনের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে রাজনীতিতে এককদম এগিয়ে থাকবে বিএনপি।
আগে বিএনপির দাবি ছিল ‘সহায়ক’ সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি। কিন্তু তাদের এ দুই দাবির একটিও পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায় না। আদালতের নির্দেশে খালেদা জামিন পেলেও সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। বিএনপির সামনে পথ খোলা দুটি – হয় গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা অথবা খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারুক আর না পারুক বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া। সরকার যদি বিএনপির সম্ভাব্য বিজয় ছিনিয়েও নেয় (যে আশঙ্কা বিএনপি নেতারা অনবরত ব্যক্ত করে চলেছেন) তাহলেও সংসদে থাকার সুযোগ পাবে বিএনপি। শক্তিশালী বিরোধী দলের প্রয়োজন পূরণ করতে পারলেও বিএনপি রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবে। আর বিএনপি যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করে, তাহলে তাদের পস্তাতে হবে।
তত্ত্বাবধারক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার জেদ আগেরবার বিএনপির জন্য শুভ হয়নি, এবার যদি খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার জেদ বিএনপি করে তাহলেও দলের জন্য ফল ভালো হবে বলে মনে হয় না। সরকার অবশ্যই চাইবে নিজেদের জন্য অনুকূল পরিবেশে নির্বাচনে যেতে। বিএনপি যেমন ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ চায়, সরকার বা আওয়ামী লীগও তো তাই চাইবে। বিএনপি যদি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে সুযোগ করে দেয়, তাহলে সে দায় তো বিএনপিরই। বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে একটি কোরাসধ্বনি আমরা শুনতে পাই; কিন্তু নির্বাচন ‘বিতর্কিত’ হলেও ক্ষমতার মেয়াদ পূরণে যে সমস্যা হয় না, সে অভিজ্ঞতাও আমাদের হয়েছে। বিএনপির কৌশল এবং সিদ্ধান্তের ওপর আগামী দিনের রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করছে।”
বছর দেড়েক আগে যেসব কথা বলেছিলাম তা থেকে পরিস্থিতি বদলায়নি। বিএনপি কৌশল এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পেরেছে সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে থাকেনি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভালো করেছে। নির্বাচনের ফলাফল তাদের অনুকূলে যায়নি। বিএনপি এবং তার মিত্ররা সংসদে মাত্র ৮টি আসন পেয়ে প্রথমে সংসদে না যাওয়ার কথা বলে শেষে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয়েছে। কোনো কিছুতেই বিএনপি রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারছে না। বিএনপিকে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হলে অনেক কিছুই বদলাতে হবে। মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। আওয়ামী লীগের যোগ্য বিকল্প হয়ে উঠতে হবে। জামায়াত এবং তারেক রহমান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজনীতিতে একটি ফ্রেশ ইমেজ নিয়ে দাঁড়াতে না পারলে বিএনপি তাদের পক্ষে মানুষের সমর্থন পাবে না। বিএনপি পুরনো ধারায় জাবর কেটে কালক্ষেপন করবে, নাকি সাহসের সঙ্গে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনে আগানোর চেষ্টা করবে – সেটা বিএনপির ব্যাপার। অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে না পারাটাও বড় ধরনের রাজনৈতিক ব্যর্থতা। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বেরুতে পারছে না বিএনপি।
সামগ্রিকভাবেই আমাদের দেশের রাজনীতিতে আস্থা-ভরসার জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সুস্থ্য রাজনীতির বিকাশের জন্য এটা অবশ্যই অনুকূল অবস্থা নয়।