নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে নানান অপকর্ম, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগকে পূর্নবাসন করা ও প্রকৃত আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে নিজেস্ব বলয় তৈরি করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপরপক্ষ। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন সরকার পতনের আন্দোলনের মাঠপর্যায়ের থাকা শিক্ষার্থীরা। তারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোরে দৃশ্যমান দুটি পক্ষের একটি। সংবাদ সম্মেলনে নাঈম ইসলাম বলেন, বর্তমানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দুটি গ্রুপ নাটোরে বিদ্যমান রয়েছে। যার একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ ওবায়দুল্লাহ মিম এবং শিশির মাহমুদ। নাটোরে কোনো সমন্বয়ক না থাকলেও তারা নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছে। সেই সাথে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা চাচ্ছে। নাঈম ইসলাম বলেন, ১১ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় মতবিনিময় সভায় মিম-শিশির নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিয়াম রেজাকে দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। যা দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়। এরপর সিয়াম রেজার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।সেখানে হাতাহাতি হয়। সেসময় শেখ ওবায়দুল্লাহ মিম ওই বাহিনি দিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলেজ মাঠে মঞ্চ ভাঙচুর করে পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে মিম গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে দেয় অপর দিকে শিশির গণমাধ্যমে ছাত্রদলের ওপর দোষ চাপায়। নাঈম ইসলাম বলেন, মিম-শিশির ১৮ তারিখের কোটা সংস্কার আন্দোলনে থাকলেও ৪ আগস্টের সরকার পতনের আন্দোলনে তারা ছিলোনা। অথচ ৫ আগস্টের পর থেকেই প্রকৃত আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে মিম-শিশির ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পূর্নবাসিত করে এবং নিজস্ব বলয় তৈরি করতে থাকে। মো. ইব্রাহীম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘যারা এক দফার কবর দিতে চেয়েছিল, তাদের অনেকেরই এখন সমন্বয়ক হওয়ার সাধ হয়েছে। সমন্বয়ক পরিচয়ে কেউ যদি সরকারি দপ্তর সহ বিভিন্ন জায়গায় অনৈতিক সুবিধা নিতে চায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতিরোধ করার আহ্বান করছি। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা প্রমাণ স্বরূপ বিভিন্ন প্রিন্ট করা ছবি সাংবাদিকদের উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সরকার পতনের আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী নক্ষত্র, সাদ প্রমুখ। এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ ওবায়দুল্লাহ মিম ঢাকা বলেন, প্রথম থেকেই আমি আন্দোলনের সম্মুখে ছিলাম। ৪ তারিখে আমাদের বাড়ির সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলে আমি বের হতে পারিনি, তবে আমাদের বন্ধু সহকর্মীরা আন্দোলনে ছিল। ১১ তারিখে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিয়াম রেজা একজন আহতের অভিভাবক হিসেবে গিয়েছিল। তার ভাই আন্দোলনের সামনে ছিল। সিয়াম রেজা ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছে বলেও জানান তিনি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের দলবেঁধে যাওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল্লাহ মিম বলেন, আমাদের কাছে বেশ কয়েকজন লাইসেন্সধারী এসে বলে যে তারা খাদ্য ( চাইল) তুলতে পারছে না। এবিষয়ে জানতেই সেখানে গিয়েছিলাম। আমরা ব্যক্তিগতভাবে লাইসেন্স চাইতে বা কাউকে পাইয়ে দিতে যাইনি। সেখানে আওয়ামী লীগের এক কর্মী আগে থেকেই ছিল, যাকে নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছে, আসলে বিষয়টি কাকতালীয় ছিল। এবিষয়ে কথা বলতে শিশির মাহমুদের মুঠোফোনে কল করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।