নিউজ ডেস্ক : দলীয় টানাপোড়েন পিছু ছাড়ছে না পুরো বিএনপির কাছ থেকে। ভেঙ্গে পড়ছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। আগ্রহ হারাচ্ছে নেতাকর্মীরা। এমন অবস্থার স্পষ্ট প্রমাণ সিলেট বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা নিয়ে এগুলেও শেষপর্যন্ত রাজনীতিতে ইস্তফা দিয়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন অনেক নেতা। যা সিলেট বিএনপি জন্য অশনিসংকেতে রূপ নিয়েছে।
দলীয় সূত্র বলছে, এই সিলেট এক সময় ছিল বিএনপির ঘাঁটি। সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান থেকে শুরু করে সাবেক সংসদ সদস্য, নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী ও সাবেক নগর বিএনপির সভাপতি আরিফুল হক চৌধুরীর দাপট ছিল এ অঞ্চল জুড়ে। মূলত সাইফুর রহমানের মৃত্যু এবং ২০১২ সাল থেকে ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকেই সিলেট বিএনপির রাজনীতিতে রং হারাতে শুরু করে। সে সময় কিছুদিন স্বেচ্ছাসেবক দল দিয়ে রাজপথ কাঁপিয়ে তোলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান। তিনিও বর্তমানে ফেরারি।
এসব অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে সিলেটে বিএনপির সুসময় চিরতরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নেতাকর্মীরা এখনও ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় পতিত হয়েছে। কোনো কর্মসূচিতেও তাদের মনোযোগ নেই।
এদিকে আগামী মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় সিলেটের রেজিস্টারি মাঠে এক বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যাশা করছে সিলেট বিএনপি। কিন্তু সেখানে প্রধান বিপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্মী সংকট।
এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে, লন্ডনে তারেক রহমান। এমন প্রেক্ষাপটে দলের অভ্যন্তরে একটি বড় রকমের নেতৃত্ব শূন্যতা বিরাজ করছে, যার প্রভাবে নেতারা দিকভ্রান্ত হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত। চেষ্টা করেও নেতাদের মনোযোগ দলে ফেরানো যাচ্ছে না। ফলপ্রসূ রাজনীতির ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা থেকেই এই বৈরি মনোভাবের সৃষ্টি, যা সিলেট বিএনপিকে গভীর থেকে গভীরতর সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটে মহাসমাবেশের আয়োজনের কথা হলেও কর্মী সংকটকে এড়ানো যাচ্ছে না। তবু সমাবেশ সফল করতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখছি না।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, মূলত খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের গড়িমসি থেকেই নেতাদের মধ্যে এক ধরণের অনীহা তৈরি হয়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সেই অনীহা কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকিটা সমাবেশ পরবর্তীতে বোঝা যাবে।
জানা গেছে, ২৪ সেপ্টেম্বর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারাও সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে।