নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের ডেনিম পণ্য এখন বিশ্বসেরা। খরচ ও মানে বিশ্ববাজারে এগিয়ে আছে বাংলাদেশের ডেনিম পোশাক। ডেনিম ফেব্রিকসের কাঁচামাল বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। ফলে দাম কম। অভিনব ডিজাইন ও সৃজনশীল পোশাক প্রস্তুতের জন্য ডেনিমের জনপ্রিয়তা বেশি। বাংলাদেশের ডেনিম ওয়াশিংয়ের ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট। উৎপাদিত পণ্যের ফিনিশিং হয় আকর্ষণীয়। এসব কারণেই বাংলাদেশে ডেনিম পোশাক এখন বিশ্বসেরা। বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর আয়োজনে উৎপাদন ও উদ্ভাবন তুলে ধরতে দুই দিনব্যাপী প্রদর্শনী করেছেন উদ্যোক্তারা। দুই দিন ধরে এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে দেশি-বিদেশি ৮৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে দেশি ২৭টি ও বিদেশি ৫৭টি। বাংলাদেশের পণ্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত করার জন্য এ আয়োজন। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ডেনিম এক্সপোর আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এবারের ডেনিম এক্সপোতে চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপান, পাকিস্তান, সান মারিনো, সিঙ্গাপুর, স্পেন, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র ও হংকং অংশ নিয়েছে। স্থায়িত্ব, নিত্যনতুন ডিজাইন ও বৈচিত্র্যের কারণে বাংলাদেশের ডেনিম দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমাদৃত। হাল ফ্যাশনের অন্যতম উপকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ডেনিম। রেমন্ডটেক্স করপোরেশনের মার্কেটিং ম্যানেজার মো. জয়নাল আবেদিন সুুমন বলেন, রেমন্ড বাংলাদেশের সোল এজেন্ট। ২০০০ সাল থেকে রেমন্ডের যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে ৫ লাখ কাপড় বিক্রি করে থাকে। তবে বৈশ্বিক মন্দার কারণে এখন বিক্রি কম হয়। এই এক্সপোতে অংশগ্রহণ করার মূল উদ্দেশ্য আমাদের পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে বায়ারকে জানানো। নতুন নতুন বায়ারের সঙ্গে মেলায় আসছেন সাবেক বায়াররা।
প্রায়নীর ডেনিমের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দাউদ বিন জাফর বলেন, ‘আমরা আমাদের ইনোভেশন মানুষকে জানানোর জন্য মেলায় অংশগ্রহণ করেছি। আগে রিসাইকেল করে বিভিন্ন পণ্য বাইরে থেকে আনা হতো। এখন আমরা নিজেরাই তৈরি করে থাকি। কটন ডেনিম, ইলাস্টিক ডেনিম, রিসাইকেল ডেনিমসহ বিভিন্ন ধরনের ডেনিম আমাদের এখানে তৈরি হয়। আমাদের কারখানাগুলো পরিবেশসম্মত। আমরা সাসটেইনেবল প্রোডাক্ট তৈরি করে থাকি।’ আডজি টিমস লিমিটেড কোম্পানির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ এস এ শাওন বলেন, ‘গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজে অনেক ধরনের মেশিনের প্রয়োজন হয়। আমরা গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের জন্য প্রায় সব ধরনের মেশিন তৈরি করে থাকি। আমাদের পাঁচটি ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণ করায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। এখানে সবার সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি হচ্ছে।’ মেলার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ডেনিম এক ধরনের ওভেন ফেব্রিক, যা থেকে শার্ট, প্যান্ট, জ্যাকেটসহ নানা ধরনের পোশাক হয়। মেলায় একাধিক সেমিনারে এ শিল্পের সম্ভাবনা ও সংকট এবং এই সংকট দূর করার বিষয়ে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা তাদের অভিমত তুলে ধরেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের উদ্যোক্তারা পোশাক খাতের সক্ষমতা দেখাচ্ছেন। নতুন ও চোখ ধাঁধানো ডিজাইন, নতুন ধরনের পোশাক প্রদর্শনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে আসা বিদেশি ক্রেতাদের সামনে পোশাকশিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরছেন অংশগ্রহণকারীরা। এ ছাড়া এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে একটি নেটওয়ার্ক বা প্ল্যাটফরম তৈরি হবে বলে প্রত্যাশা অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। সপ্তাহব্যাপী মেড ইন বাংলাদেশ উইকে দেশে প্রথমবারের মতো এ আয়োজন উপলক্ষে ১৬০ দেশের ৫৫০ ক্রেতা ও ব্র্যান্ড প্রতিনিধি এখন ঢাকায়। এ উপলক্ষে তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বিভিন্ন দেশ ও জোটের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। গতকাল ছিল এ আয়োজনের পঞ্চম দিন। এদিন ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শেষ হয় বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপো, ঢাকা অ্যাপারেল এক্সপো ও ঢাকা অ্যাপারেল সামিট।