২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আইডিএ (সহজ শর্তে ঋণ) সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ সহায়তা। শীর্ষ আইডিএ সহায়তা পাচ্ছে আরেক উন্নয়নশীল দেশ ইথিওপিয়া, যার পরিমাণ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশ অফিসের নিজস্ব পেজে (ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ) ২০১৯ অর্থবছরের জন্য তাদের আইবিআরডি ও আইডিএ ঋণ সহায়তার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর সংস্থাটি বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের জন্য ৪৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা ঘোষণা করে। এর মধ্যে আইবিআরডি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার এবং আইডিএ ঋণের পরিমাণ প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার। শুধু দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এই অর্থবছরের জন্য ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ বরাদ্দ রেখেছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার আইবিআরডি এবং ৪ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার আইডিএ সহায়তা।
বরাদ্দকৃত এই আইডিএ সহায়তার অর্ধেকই পাচ্ছে বাংলাদেশ, যা এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে ভারতের জন্য। অবশ্য ভারতের প্রায় পুরো ঋণই আইবিআরডি বা কঠিন শর্তের ঋণ। তৃতীয় অবস্থানে পাকিস্তানের জন্য ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ৫৩০ মিলিয়ন ও আফগানিস্তানের জন্য ৪৬০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সর্বোচ্চ আইডিএ সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ, যা বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সূত্র জানায়, মাথাপিছু আয়সহ জাতিসংঘের কয়েকটি সূচকে উন্নতি হওয়ায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সহজ শর্তে আইডিএ ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে ভারত, পাকিস্তানের মতো কঠিন শর্তের আইবিআরডি ঋণ নিতে হবে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে।
বর্তমানে চলমান বিশ্বব্যাংকের স্বল্প সুদের ঋণ প্যাকেজ আইডিএ-১৮-এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২০ সালে। তিন বছরে এ প্যাকেজের আওতায় সংস্থাটির প্রতিশ্রুতি ছিল ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪২০ কোটি মার্কিন ডলার। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাংলাদেশ নির্ধারিত বরাদ্দের অর্থ ঋণ নিয়ে ফেলেছে। সক্ষমতার কারণে এই ঋণ খরচ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। অথচ একই সময়ে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সঠিকভাবে অনেক দেশ ব্যবহারও করতে পারেনি।