বুধবার , নভেম্বর ৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / বিশেষ রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে না বাংলাদেশ

বিশেষ রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে না বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশেষ কোনো রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে না বাংলাদেশ। কোনো বিশেষ রাষ্ট্রের দিকে ঝোঁকা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ নয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।

পশ্চিমা গণমাধ্যমে সম্প্রতি এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইন্দো-প্যাসিফিকে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চীনা বলয় থেকে বেরিয়ে মার্কিনের দিকে ঝুঁকছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য কী তা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশ কোনো বিশেষ রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে তার পররাষ্ট্রনীতির মূলস্তম্ভ ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’—থেকে কখনো বিচ্যুত হবে না।”

মুখপাত্র বলেন, ‘দেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থ, উন্নয়নকে উত্সাহিত করা, জীবিকা এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নই আমাদের পররাষ্ট্রনীতির প্রাথমিক ভিত্তি। সন্দেহাতীতভাবে এসব বেশির ভাগ নির্ভর করে বঙ্গোপসাগর ও বিভিন্ন সাগর, মহাসাগরে মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের ওপর।’

সেহেলী সাবরীন বলেন, উপকূলীয় রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ওই বিশাল বাণিজ্য রুটের পাশের দেশ হিসেবে, ভূ-রাজনৈতিকভাবে উন্নয়নে সাগর-মহাসাগরের যে কানেক্টিভিটি তাতে যুক্ত না হয়ে নিষ্ক্রিয় থাকবে এটা প্রত্যাশা করা সমীচীন হবে না।

শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভূ-রাজনীতির প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার তুলে ধরেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। তিনি বলেন, অর্থনীতি ও উন্নয়নকে কেন্দ্রে রেখে ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্কিত প্রত্যাশা ও অগ্রাধিকারের রূপরেখা নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে যোগ দেয়। যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে তার ইন্দো-প্যাসিফিক উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

ট্রাম্প নিয়ে বার্তা : বাংলাদেশে বিভিন্ন বিচার নিয়ে মন্তব্য করা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রেপ্তার হওয়াকে বাংলাদেশ কিভাবে দেখে? রাজনৈতিক বিরোধীকে দমনে যুক্তরাষ্ট্রে আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্ন উঠেছিল ব্রিফিংয়ে। জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেপ্তার যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বিচারাধীন। আমরা মনে করি, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা আমাদের সমীচীন নয়।’

ইউক্রেন ইস্যুতে ভোটের ব্যাখ্যা : ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট না দিয়ে ‘অ্যাবস্টেনশন’ ভোট দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে সোহেলী সাবরীন বলেন, যখনই নির্দিষ্ট কোনো দেশকে লক্ষ্য করে ভোটাভুটি হয়, তখন বাংলাদেশ সাধারণত কোনো পক্ষ নেওয়া থেকে বিরত থাকে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। সে জন্য প্রস্তাবে কী আছে তা পরীক্ষা করে আমরা মতামত জানিয়ে থাকি।

তিস্তার বিষয়ে চিঠির জবাব এখনো দেয়নি ভারত : প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, তিস্তার পানি প্রত্যাহারে পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে দুটি খাল খননের বিষয়ে জানতে চেয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া কূটনৈতিক পত্রের জবাব ভারত এখনো দেয়নি ভারত। সম্প্রতি ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় আরো দুটি খাল খননের জন্য প্রায় এক হাজার একর জমির মালিকানা পেয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগ।

র‌্যাব কাজ করছে দেশের নিরাপত্তায় : র‌্যাব নিয়ে জার্মানিভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের যৌথ প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘র‌্যাব দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য র‌্যাবকে ব্যবহার করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।’

সৌদিতে ভিসা বাণিজ্যে জড়িত বাংলাদেশিদের নিয়ে অস্পষ্টতা : সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অবৈধ ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে গ্রেপ্তার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আট বাংলাদেশির মধ্যে ছয়জনের পরিচয় আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি সৌদি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছে। সেখান থেকে কোনো তথ্য পেলে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবে। তারা আবার আমাদের দূতাবাসকে জানাবে। সৌদি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো তথ্য আসেনি।’

প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের বার্তার অপেক্ষা : সেহেলী সাবরীন বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছিল মূলত প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য। মিয়ানমার পক্ষ কূটনৈতিক চ্যানেলে প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ জানাবে। তারা এখনো জানায়নি। প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন : প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস নোটে তাঁর বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। অথচ তিনি যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সেখানে এ বিষয়টি নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে আগেই কথা বলেছেন।

আরও দেখুন

সিংড়ায় যৌথবাহিনীর ব্যাপক তল্লাশি

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,, সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালায় যৌথবাহিনী। এসময় তাদের মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, কাভার্ড …