নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) উদ্ভাবিত ধান, সরিষা, পাটশাক চাষ করে একই জমি থেকে বছরে চার ফসল ঘরে তুলছেন ময়মনসিংহের কৃষকরা। বর্তমানে আগাম জাতের আমন বিনাধান-১১ ও বিনাধান-৭ কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এরপর বিনা জাতের সরিষার আবাদ শুরু করবেন তারা। একই জমি থেকে বছরে চার ফসল ঘরে তুলতে পেরে যারপর নাই খুশি এখানকার কৃষকরা। বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের উন্নত অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালকে সামনে রেখে দ্বিগুণ ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে বিনার বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে বিনার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা দুই ফসলি জমিতে চার ফসল আবাদ করতে পারছেন। ফলে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের আয়ও বেড়েছে। ময়মনসিংহ সদরের পরাণগঞ্জের কান্দিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ চলতি আমন মৌসুমে ১১০ শতক জমিতে, কৃষক রুহুল আমীন ১২০ শতক এবং কৃষক ইব্রাহিম ১৪০ শতক জমিতে আগাম উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত বিনাধান-১১ ও বিনাধান-৭ আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে সে আমন ধান পেকে গেছে। আর তা কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় করছেন তারা। কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, এ ধান চাষ করে তিনি একই জমি থেকে চারটি ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। এখনও অন্য জাতের আমন ধান না পাকলেও বিনা জাতের ধান কেটে ঘরে তুলছেন তারা। আগাম জাতের আমন ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
কৃষক রুহুল আমীন জানান, আগাম জাতের বিনাধানের যেমন ভালো দাম পাওয়া যাবে তেমনই এর খড় বিক্রি করেও লাভবান হওয়া যাবে। কারণ গ্রামে এখন গো-খাদ্যের জন্য খড়ের চাহিদা রয়েছে। বিনাধান কাটার পর তিনি ৭৫-৮০ দিনে কাটা যায় এমন বিনা জাতের সরিষার আবাদ করবেন। সরিষা কেটে অল্প সময়ের জন্য ওই জমিতে পাটশাকও করতে পারবেন। এভাবে একই জমিতে বছরে চার ধরনের ফসল উৎপাদন করছেন তারা। একই এলাকার ইব্রাহিম জানান, আগে যে জমিতে দুই ফসলের বেশি আবাদ করা যেত না, সেখানে চারটি ফসল আবাদ করতে পারছি। এ ক্ষেত্রে বিনা থেকে তাদের বীজ, সারসহ নানা কারিগরি সহায়তা করা হচ্ছে। বিনার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফিরোজ হাসান জানান, প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষককে একই জমিতে ৪টি ফসল করার ক্ষেত্রে বিনার প্রযুক্তির মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। স্বল্পকালীন আমন বিনাধান-১১ ও বিনাধান-৭ জাতের ধান আবাদের ফলে কৃষক দ্রুততম সময়ে আগাম জাতের ধান ঘর তুলতে পারছেন এবং এরপরই বিনার সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। তারপর অল্প সময়ের জন্য বিনার পাটশাক আবাদ করে তা বাজারে বিক্রি করে আবারও সহজেই বোরো আবাদ করতে পারছেন কৃষকরা।
ময়মনসিংহ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মতিউজ্জামান জানান, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৬৬ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। মাঠে আগাম জাতের বিনার আমন ধান পাকতে শুরু করায় কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছে। এ জাতের ধান আবাদ করে কৃষকরা একদিকে আর্থিকভাবে যেমন লাভবান হচ্ছে অপরদিকে একই জমিতে বছরে ৪টি ফসলও আবাদ করতে পারছে।
আরও দেখুন
লালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সাংবাদিকের ছেলের মৃত্যু!
নিজস্ব প্রতিবেদক লালপুর,,,,,,,,,,,,,,,, নাটোরের লালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জিহাদ ইসলাম (১৫) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। …