নিউজ ডেস্ক:
বিদেশি ব্র্যান্ডের খালি মদের বোতল জোগাড় করে তাতে বিষাক্ত রাসায়নিক স্পিরিট মিশিয়ে তৈরি হয় পানীয়। যা পান করে গুরুতর অসুস্থ এমনকি মারাও যাচ্ছেন অনেকে।
বেশ কবছর ধরে রাজধানীতে এমন কথিত বিদেশি মদ বিক্রেতাদের একটি চক্র শনাক্ত করেছে পুলিশ। নিখোঁজ এক ব্যক্তিকে জিম্মি করে মুক্তিপণ চাওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রটির খোঁজ পেয়েছে তারা।
২৫শে মে ঈদুল ফিতরের দিন চকবাজার থেকে নিখোঁজ হন আব্দুর রহমান। ৮দিন পর তার মা থানায় জিডি করেন। প্রায় দেড় মাস পর রহমানের মায়ের মোবাইলে অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে। দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
নিহত রহমানের মা জানান,’আমার ছেলে যে তোমার কাছে আছে তার প্রমাণ কি? এ কথা বললে সে আমার সঙ্গে খুব খারাপ ভাষায় কথা বলতে শুরু করলো। আমি তাকে বলি যে, দেখ সে আমার সন্তান, তুমি আমাকে যতই খারপ কথা বলো; আমার সন্তানের সঙ্গে কথা বলায় দাও। তুমি টাকা নাও।’
ফোনের সূত্র ধরে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার হয় খোকন নামের একজন। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ঈদের দিন রহমানসহ কয়েক বন্ধু মিলে মদপান করেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে মৃত্যু হয় রহমানের।
ডিএমপি লালবাগ বিভাগ উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান,’ঢাকা মেডিক্যালে নেয়ার পর সে মারা যায়। তারপর শাহবাগ থানা তদন্ত রিপোর্ট তৈরী করে বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করে, নিতের পরিচয় পাওয়া যায় কিনা। তার একটি মোবাইল নাম্বার দেয়া ছিল, সেটা দিয়ে পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। জুন মাসের ১ তারিখে তারা আঞ্জুমন মফিদুলকে মরদেহ দিয়ে দেয়। তারা যথারীতি মরদেহ দাফন করে দেয়।’
খোকনের দেয়া তথ্যে গ্রেপ্তার হয় রোকন। যার কাছ থেকে মদ কেনা হয়েছিল।গ্রেপ্তার হয় সাদেক ও জুয়েল নামে আরো দুইজন। বংশালে জুয়েলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ উদ্ধার করে ৫৫ বোতল বিদেশী লেবেল লাগানো মদ, ৫৯টি খালি বোতলসহ বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক।
জিজ্ঞাসাবাদ মেলে কিভাবে খালি বোতল কিনে স্পিরিট ও রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরির পর বিক্রি হয় কথিত এসব বিদেশী মদ।
ডিএমপি লালবাগ বিভাগ উপ-পুলিশ কমিশনার আরও জানান,’তারা বার থেকে এবং সচারচার যেভাবে পাওয়া যায় সেভাবে সংগ্রহ করে। লেবেল এবং কট তারা নিজেরা তৈরী করে। বারের থেকে কমদামে তারা বিক্রি করে।’
পুলিশ বলছে, অবৈধ এই ব্যবসার পাশাপাশি চিন্তার বড় কারণ বিদেশী মদ ভেবে পান করার পর মৃত্যু বা অসুস্থ্যতা।
সূত্র: ডিবিসি নিউজ