নিজস্ব প্রতিবেদক:
পরিত্যক্ত ইটভাঁটার পোড়া মাটিতেও যে সবুজের সমারোহ গড়ে তোলা যায় তা করে দেখিয়েছেন হেলাল উদ্দিন। এ সবুজের সমারোহ এক নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করে দিয়েছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহাতলী গ্রামের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন। তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক হয়েও এই উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন সবার। হেলাল উদ্দিন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন সাংবাদিক।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি এই দুর্লভ ও রসালো অর্গানিক ফলের চাষাবাদ শুরু করেছেন মাত্র কয়েক মাস আগে। সেখানে চাষ হচ্ছে দুর্লভ ও রসালো হরেক প্রজাতির বিদেশি অর্গানিক ফল। তার এ প্রকল্পের নাম দিয়েছেন তিনি ‘ফ্রুটস ভ্যালি’। এসব ফলের মধ্যে রয়েছ সাম্মাম, রকমেলন ও মাস্কমেলনসহ তিন জাতের ব্যতিক্রমী তরমুজ। এ ছাড়াও রয়েছে বিদেশি নানা জাতের আম, মাল্টা, ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরি ও ক্যাপসিকামসহ নানা প্রজাতির ফল।
হেলাল উদ্দিনের ভাতিজা জিয়াউর রহমান বলেন, এই স্থান একটি পরিত্যক্ত ইটভাঁটা ছিল। আড়াই একর জমিতে আমরা প্রাথমিকভাবে প্রজেক্টটি চালু করেছি। এখনও আমরা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত শুরু করিনি। ফলের চাষ করে সাফল্য পাচ্ছি। শিগগিরই সাম্মাম, রকমেলন ও মাস্কমেলন বাজারজাত করব।
ফ্রুটস ভ্যালি বাগানে ঘুরতে আসা মোরশেদ আলম নামে এক যুবক বলেন, শাহাতলী এলাকায় সাংবাদিক হেলাল উদ্দিন যে ফলের
বাগান গড়ে তুলেছেন, তা খুবই প্রশংসনীয়। এটি হাজারও যুবকের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে। এখানে এলে যে কেউই ফলের বাগান গড়ে তোলার উৎসাহ পাবে।
হেলাল উদ্দিন বলেন, এটি একটি লাভজনক প্রকল্প। পরিত্যক্ত দুটি ইটভাঁটার প্রায় আড়াই একর দূষণযুক্ত জমি মাটি বালু ফেলে ফল চাষ শুরু করেছি। এখানে বিশ^খ্যাত উন্নত জাতের কিছু ফল আবাদ শুরু করেছি। এটি হচ্ছে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিদেশি কোনো ফলের বাণিজ্যিক চাষ প্রকল্প। আমাদের মূল ফলটি আসতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগতে পারে।
তিনি বলেন, এভাবে যদি এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা এগিয়ে আসে, তা হলে যেভাবে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে তার পাশাপাশি আমরা ফল আমদানি করেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারব। দেশও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। এমন উন্নত জাতের ফল যদি আমরা চাষ করতে পারি এবং এটি সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারি তা হলে সবাই তা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করতে পারবে।
হেলাল উদ্দিন জানান, ফ্রুটস ভ্যালি বাগানে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। বাগানে সর্বাধুনিক সব কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
তিনি বলেন, বিষমুক্ত ও কীটনাশকমুক্ত অর্গানিক ফল চাষ করে পাইকারি মূল্যে সারা দেশের ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে পারলেই আমরা নিজেদের সফল বলে মনে করব।