নিউজ ডেস্ক:
বিডিআরের ঘটনার পেছনে বিএনপি-জামায়াত ও ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টিকারীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সরকার গঠনের ৫২ দিনের মাথায় এই ঘটনা ঘটলো। ওই ঘটনায় যে ৩৩ জন সেনা অফিসার মারা যান তারা আওয়ামী লীগ পরিবারের। বিডিআরের ডিজি ছিলেন। ওই সংসদের সদস্য লুৎফুল হাই সাচ্চু তার আপন চাচাত ভাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জামায়াতের মিথ্যা বলার একটা আর্ট আছে। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর তারা ব্যাপক প্রচার করে ফেলেছিল আমি নাকি নিজেই গ্রেনেড নিয়ে নিজেই মেরেছি। বিডিআরের ঘটনার পরও তারা এভাবে অপপ্রচার শুরু করেছিল। বিডিআর বিদ্রোহটাও ছিল একটা অস্বাভাবিক ঘটনা, একদিন না একদিন সত্যটা বেরিয়ে আসবে। সরকারে থেকে আমরা এমন একটা ঘটনা ঘটাবো তা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। যারা ক্ষমতায় আসতে পারে নাই তারাই তাদের পেছনে ছিল। তাদের সঙ্গে ছিল ওয়ান ইলেভেন যারা সৃষ্টি করেছিল তারা। আওয়ামী লীগ মেজরিটি নিয়ে ক্ষমতায় আসায় সবকিছুকে নস্যাৎ করার পরিকল্পনায় তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
আজ রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে সাহারা খাতুনের স্মৃতি চারণকালে শেখ হাসিনা বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে বিএনপি-জামায়াত ছিল।সাহারা খাতুনের সাহস দেখেছি বিডিআরের ঘটনার সময়। সাহারা আপা ঝুঁকি নিয়ে সেখানে গিয়েছেন। রাতের বেলা সেখানে গিয়ে বিডিআর সদস্যদের আর্মড সারেন্ডার করিয়েছেন। অনেক আর্মি অফিসার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন। এজন্য তার জীবনের ওপরও হুমকি এসেছিল। এরকম অবস্থায় তিনি দুঃসাহসিক ভূমিকা রেখেছিলেন। কোনও সাধারণ মানুষ এই সাহস করতে পারতো না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি সততার সঙ্গে কাজ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিডিআরের ওই ঘটনাটি ছিল অস্বাভাবিক। ঘটনার আগের দিন আমরা গেলাম। একটা ভালো পরিবেশ। পরের দিন এ ঘটনা ঘটলো- এর পেছনে কারা আছে? আমরা তো কেবল সরকার গঠন করেছি। এটা কোনো দিনই যুক্তিযুক্ত নয়- সরকার গঠনের পর আমরা এমন একটা ঘটনা কেন ঘটাবো, যাতে দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়? কাজেই যারা তখন ক্ষমতায় আসতে পারেনি তারাই এর পেছনে ছিল। তাদের সঙ্গে ওয়ান/ইলেভেন যারা সৃষ্টি করেছিল, যাদের ধারণা ছিল একটা হ্যাং পার্লামেন্ট হবে। কিন্তু দেখলো আওয়ামী লীগ যখন মেজরিটি নিয়ে চলে এলো- তখন সবকিছুকে নস্যাতের পরিকল্পনা যাদের ছিল তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। একদিন না একদিন এই সত্য বের হবে।
সাহারা খাতুনকে স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক আন্দোলন সংগ্রামে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতেন। কোনো ভয়ভীতি ছিল না। তার ওপর যে অত্যাচার জুলুম হয়েছে। এরশাদ সাহেব যখন ক্ষমতায় তখন তার ওপর লাঠির বাড়ি, পিটিয়ে ডাস্টবিনে পর্যন্ত ফেলে দিয়েছে। এরপর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরও একই অত্যাচার। ওই সময় ছিল সীমাহীন অত্যাচার। একদিকে পুলিশ আরেক দিকে ছাত্রদলের ক্যাডার। তিনি (খালেদা জিয়া) নিজেই বলতেন ছাত্রদলকে দিয়েই নাকি আওয়ামী লীগকে সোজা করে দেবেন। তাদের অত্যাচারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, মহিলাকর্মী কেউই বাদ যেত না। একদিনে অত্যাচার আর অন্যদিকে মামলা-মোকাদ্দমা চলতো।
মারা যাওয়া অপর সদস্য ইসরাফিল আলমকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত অল্প সময়ে চলে যাবেন বুঝতে পারিনি। করোনা হওয়ার পর ভালোও হয়েছিল। তার কিডনির সমস্যা ছিল। কিন্তু সে কিছু মানেনি। যখন একটু সুস্থ হলো, চলে গেল এলাকায়। এভাবে করোনার সময় আমরা আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী হারিয়েছি। করোনার সময়ে তারা ঘরে ঘরে রিলিফ পৌঁছে দিয়েছে। বন্যায় রিলিফ পৌঁছাতে গেছে। এতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে, মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়েই কিন্তু তারা জীবন দিয়েছেন। ইসরাফিলের ক্ষেত্রেও সেটা হয়েছে।
সূত্র: চাঁপাইনবাবগঞ্জ