বিশেষ প্রতিবেদক:
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ ১৬ই ডিসেম্বর ২০২০ পিপরুল ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে আয়োজক মোহাম্মদ আলী মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান তুলে ধরে নেতা কর্মীদের দেশ গঠনের আহ্বান জানান।
যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের মূল পর্ব ছিল বিজয়ের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং রাত ১২.০০ টায় আতশবাজির মাধ্যমে বিজয় দিবসের উদ্বোধন। এর আগে সন্ধ্যায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সাথে আনন্দভোজন করা হয়। পরদিন বিজয় দিবসে সকাল আটটায় জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা শেষে বিজয়ের আলোচনা শুরু হয়।
ইউপি আ.লীগের সেক্রেটারী মোহাম্মদ আলী সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নূর ইসলামসহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি সাহেব আলী, প্রাক্তন ইউপি সদস্য আনোয়ার, রেজাউল করিম স্বপন এবং ইউপি সদস্য ঈমান আলী মোল্লা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহেব আলী খাঁ বলেন,‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আহ্বানে স্বাধীনতা আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। দীর্ঘ নয় মাস স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলাম। এ জন্য ৩০ লাখ মানুষকে শহীদ হতে হয়েছে।আমরা জাতীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।’
আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক নূর ইসলাম বলেন,”মূলত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা ২৬-শে মার্চ হলেও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তারপর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ‘সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ কর্তৃক ১১ দফা আন্দোলন, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাই। অনেক ত্যাগের পর বঙ্গবন্ধুর অনস্বীকার্য মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। এ বিজয়ে সাংবাদিকদের অবদান ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা বর্হিবিশ্বে পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যার কথা প্রচার করে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন তৈরি করেছিলেন। এর ফলশ্রুতিতে জর্জ হ্যারিসন, রবি শংকর, বব ডিলানের মতো বিখ্যাত সঙ্গিতজ্ঞরা “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ” আয়োজন করে বাংলাদেশী শরণার্থীদের জন্য অর্থ জুগিয়েছিলেন। এ বিজয় আমাদের অহংকার।”
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী সরদার পিপরুল ইউনিয়নের সকল শ্রেনীর মানুষকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর পর বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে বলেন,”এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” বঙ্গবন্ধুর হৃদয়োত্তল এ বক্তব্যের পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর একটি লাল সবুজের পতাকা ও একটি স্বাধীন মানচিত্রের জন্ম। এরপর ‘৭৫ এ ঘটে যায় ইতিহাসের পাতায় জাতীয় কলঙ্কিত অধ্যায়। তবুও ঘাতকরা সফল হয়নি ।মুজিব চেতনায় জাগ্রত, হৃদয়ে স্পন্দিত, শোকাহত-প্রতিবাদী-মুজিব বিপ্লবী জনতা কোটি কোটি। মুজিব মরেনি।মরতে পারে না। বঙ্গবন্ধু আমাদের অনুভূতি ও অন্তরাত্মায় মিশে আছেন।শেখ মুজিব মানেই বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন,”একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার। আর মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলার জাগ্রত জনতা ছিলেন প্রতিটি শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক এবং মুক্তিযোদ্ধা। তাঁরা জাতির সূর্যসন্তান। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। তাঁদের অবদানে অর্জিত স্বাধীনতা আমাদের জন্য একটি স্বর্ণদুয়ার খুলে দিয়েছিল। যে দুয়ার দিয়ে প্রবেশ করে আমরা আমাদের যুগসঞ্চিত জঞ্জাল দূর করতে পেরেছিলাম। তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল, আমরা সব ধরনের অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন দূর করে একটি সুস্থ, শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব। সেই সদিচ্ছা নিয়ে দেশ গঠনে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
এরপর উপস্থিত সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আরও দেখুন
নন্দীগ্রামে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত
নিজস্ব প্রতিবেদক নন্দীগ্রাম ,,,,,,,,,,বগুড়ার নন্দীগ্রামে রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন হেমন্তকাল। মাঠ …