শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / শিরোনাম / বিএনপি নেতা দাউদার মাহমুদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চায় নেতাকর্মীরা

বিএনপি নেতা দাউদার মাহমুদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চায় নেতাকর্মীরা

 নিজস্ব প্রতিবেদক:

নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সিংড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব দাউদার মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। এর কারণ বিএনপির ক্রান্তিকালে শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন দাউদার মাহমুদ। ২০১৮ সালে একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির হাইকমান্ড নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে সংসদ সদস্য পদে দাউদার মাহমুদকে দলীয় মনোনয়ন দেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দাউদার মাহমুদ বিপুল ভোটে জয়লাভ করতো। প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ২০০৮, ২০১৫, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে রাজনৈতিক মামলায় কারাভোগ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় হাজিরা দিতে অধিকাংশ সময় আদালতের বারান্দায় সময় কাটে দাউদার মাহমুদের। এমন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।

দাউদার মাহমুদ ছাত্ররাজনীতিতে সিংড়া গোল-ই-আফরোজ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি পরপর দুইবার উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

বিএনপির রাজনীতিতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন দাউদার মাহমুদ। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলো। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এলাকায় শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকে। যে কারণে এলাকায় বিএনপির ভাবমূর্তি ভালো বলে এলাকাবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়ে উঠে।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করার অভিযোগ এনে গত ২০ সেপ্টেম্বর দাউদার মাহমুদকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

এ বিষয়ে দাউদার মাহমুদ বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনেই রাজনীতি করে আসছি। মিথ্যা তথ্যের কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেদিন আমি কোনো মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করিনি। একটি ইউনিয়ন বিএনপির জনসভায় আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল, মাইক্রোবাসে গিয়ে সেখানে আমি বক্তব্য দিয়েছি। আমি দলীয় সিদ্ধান্তকে সবসময় সম্মান জানাই। তবে আমি বিএনপির হাইকমান্ডের শরণাপন্ন হবো।

পৌর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক মো. ফরহাদ আলী বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলে আমার মামলার যাবতীয় খরচ ও সংসারের খরচ বহন করেছেন দাউদার মাহমুদ। শুধু আমি নয়, দলের দু:সময়ে সকল নেতাকর্মীর মামলার খরচ বহন করে দলকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

উপজেলা মৎস্যজীবি দলের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর বাবুল হোসেন বাবু বলেন, দাউদার মাহমুদ দলের জন্য অসংখ্যবার হামলা-মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। তিনি বিএনপির একজন পরিক্ষিত ও নির্যাতিত নেতা। দাউদার মাহমুদের মত নেতাকে সিংড়া বিএনপির অনেক প্রয়োজন।

উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সদস্য সচিব আলহাজ্ব এম এ মালেক বলেন, বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলের ক্রান্তিলগ্নে দাউদার মাহমুদের নেতৃত্বে সিংড়ায় মিটিং মিছিল হয়েছে। তখন সিংড়া বিএনপির অনেক নেতা ঢাকা ও নাটোরে বসে রাজকীয় জীবনযাপন করেছে। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দেশের অনেক জায়গায় যখন মিছিল হয়নি তখনও দাউদার মাহমুদ প্রতিদিন সিংড়ায় মশাল মিছিল ও এক দফা দাবির মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

ডাহিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক পিএম ইব্রাহিম হোসেন বলেন, দাউদার মাহমুদ সিংড়া বিএনপির ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে দাউদার মাহমুদের নেতৃত্বেই দলের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। তিনিই ছিলেন আন্দোলন-সংগ্রামের প্রধান সিপাহসালার।

সিংড়া পৌর বিএনপির সদস্য সচিব তায়েজুল ইসলাম বলেন, দাউদার মাহমুদ ২৯ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি করে আসছে। তার রাজনৈতিক কর্মকান্ড স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক। তিনি দু:সময়ে বিএনপির সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে দাউদার মাহমুদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি তার।

সিংড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট খান মো. আলী আজগর বলেন, দাউদার মাহমুদ সিংড়া বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয়তা নেতা। বিগত দিনে দলের দুঃসময়ে কেউ আক্রান্ত হলে তিনি উদ্ধার ও চিকিৎসা করেছেন। নেতাকর্মীদের নামে রাজনৈতিক মামলা হলে সকল খরচ তিনি ব্যক্তিগতভাবে বহন করেছেন। তাকে স্বপদে বহালের জন্য দলের হাইকমান্ডের কাছে দাবি করছি।

আরও দেখুন

বিএনপির সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ,,,,,,,,,,চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক …