বৃহস্পতিবার , মার্চ ২৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / বাগাতিপাড়ায় ৫০ জন ভূমিহীনকে জমি দিলেন জমেলা ও পলাশী রানী

বাগাতিপাড়ায় ৫০ জন ভূমিহীনকে জমি দিলেন জমেলা ও পলাশী রানী


নিজস্ব প্রতিবেদক:
জমেলা খাতুন ও পলাশী রানী ভূমিহীন হিসেবে সরকারের কাছ থেকে পত্তন নেওয়া ৯০ শাতাংশ জমি বাড়িঘর নির্মাণ করতে ৫০ জন গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে হস্তান্তর করলেন। গতকাল বুধবার এ–সংক্রান্ত কাগজপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছেন তাঁরা।

বাগাতিপাড়া ইউএনও কার্যালয় সূত্র জানায়, দারিদ্র জীবনে স্থানীয়দের মাধ্যমে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১/৯২ সালে ডিসি পিএস কেস মূলে সরকারের কাছ থেকে ভূমিহীন হিসেবে এক একর ৬৩ শতক খাসজমি বন্দোবস্ত পান। তবে সেই জমি শুধু কাগজে–কলমেই রয়ে গেছে। গত ৩১ বছরেও চাষাবাদ এবং বাড়ি-ঘর তো দুরের কথা প্রভাবশালীদের কাছ থেকে নিজেদের দখলে নিতে পারেনি। এই জমি কাজে লাগিয়ে তারা দুটি পরিবার ভাগ্যও বদলাতে পারেননি। তাই শেষ বয়সে এসে তাঁরা দুটি পরিবার ওই জমির মধ্যে ৯০ শতক জমি ভূমিহীনদের বাড়ি করতে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

জমেলা খাতুন স্বামী জমির আলী (স্বামী ও স্ত্রী যৌথ) ১৯৯১/৯২ সালে ডিসি পিএস কেস মূলে সরকারের কাছ থেকে ভূমিহীন হিসেবে এক একর খাসজমি বন্দোবস্ত পান। একই নিয়মে পলাশী রানী এবং স্বামী পরিতশ কুমার দাস ৬৩ শাতাংশ জমি বন্দোবস্ত পান। কিন্তু প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় ওই জমি শুধু কাগজে কলমেই থেকে যায় উদ্ধার করতে পারেননি। এরই এক পর্য়ায়ে জমেলা খাতুনের স্বামী জমির আলী এবং পলাশী রানীর স্বামী পরিতশ মারা গেলে দুটি পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। প্রভাবশালীদের দখলে থাকা দুটি পরিবারে বন্দোবস্তকৃত এক একর ৬৩ শাতাংশ জমি উদ্ধার অনিশ্চিত হয়ে যায়। সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজে স্ব-প্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ/ আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবয়নের জন্য জমেলার ৬০ শতাংশ এবং পলাশী রানীর ৩০ শতাংশ জমি বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত আনজুম অনন্যা, বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাদিউল ইসলাম, জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বদরুজ্জামানসহ গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতে জেলা প্রশাসক বরাবর ওই সম্পত্তি এককালীন হস্তান্তর করেন।

বাকী ৭৩ শতাংশ জমি জমেলা খাতুন ৪০ শতাংশ এবং পলাশী রানীর নামে ৩৩ শতাংশ রেখে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণ করে দিবে উপজেলা প্রশাসন। জমেলা খাতুন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের মরহুম জমির আলীর স্ত্রী এবং পলাশী রানী একই গ্রামের মৃত পরিতশ কুমার দাসের স্ত্রী।

জমেলা খাতুন জানান, সরকার জমি দিলেও জোরদারদের কবল থেকে ওই জমি আমি উদ্ধার করতে পারিনি। বারবার চাষাবাদ করতে গেলে তাদের (জোরদারদের) নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। বাড়ি করার সামর্থ্যও আমার নাই। তাই যাদের ঘরবাড়ি নাই, তাদের ঘরবাড়ি করতে ৬০ শতক জমি দিয়া দিছি। আমি খুশিমনেই দিছি।

পলাশী রানী জানান, পত্তন লেওয়ার পর থাইকি প্রভাবশালীদের কাছ থাইকি জমি দখল নিতে পারিনি। সরকার খালি জমিই দিছিলি। আমরা জমিতে গেলে মাইরি ফেলানীর হুমকি দিচ্ছিলি।

বাগাতিপাড়ার ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল বলেন, জমেলা খাতুন ও পলাশী রানী দরিদ্র হতে পারেন, কিন্তু সম্পদে লোভ নেই তাদের। তারা নিজের স্বার্থের দিকে না তাকিয়ে ৫০ জন গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি নির্মাণের জন্য তাঁদের জমি দিয়ে দিয়েছেন। এটা কয়জন পারে? আমি তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আরও দেখুন

নন্দীগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমের ইন্তেকাল, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন 

নিজস্ব প্রতিবেদক,নন্দীগ্রাম (বগুড়া): বগুড়ার নন্দীগ্রামে সেনাবাহিনীর গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া …