নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতার লোভে
নিজ পিতার নাম ও তথ্য গোপন করে মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে কাগজে কলমে পিতা দেখিয়ে নতুন
করে পুনরায় জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা উত্তোলন করে
যাচ্ছেন ভাতিজা বাবলু হোসেন। মোঃ বাবলু হোসেন (৩৯) উপজেলার দায়ারামপুর ইউনিয়নের
ডুমরাই(ঢাকাপাড়া) এলাকার মোঃ তৈয়ব আলীর (৭৭) ও মোছা জরিনা বেগম(৬০) দম্পতির ছেলে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস ও স্থানীয় স‚ত্রে জানাযায়, মোঃ বাবলু হোসেন এর জন্ম ১৯৮৫ সালে। ২০০৮
সালে তিনি ভোটার হন। জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্র হতে পাওয়া তথ্য মতে ২০০৮ সালে তার পিতার নাম
ছিল মোঃ তৈয়ব আলী এবং মাতা জরিনা বেগম । কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা নিজে নামে পাওয়ার
লোভে ২০১৮ সালে তিনি জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে তার পিতা মোঃ তৈয়ব আলীর নাম পরিবর্তন
করে তার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী শেখকে পিতা হিসেবে সংযোজন করেন। এবং জাতীয়
পরিচয় পত্র ও জন্ম নিবন্ধন উভয়েই স্থানেই মাতার নাম জরিনা বেগমই রাখেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী
শেখ ওই এলাকার মৃত আশোক আলীর ছেলে। স্থানীয়রা জানান, বাবলু হোসেন এর চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা
আয়ুব আলী শেখ ১৯৭৯ সালে অবিবাহিত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করেন।এবং তাঁর মৃত্যুর
৬ বছর পরে বাবলু হোসেন এর জন্ম হয়। ব্যক্তি মৃত হওয়ায় ৬ বছর পরেও কিভাবে পুত্রের জন্ম দেন এই নিয়েও
নানা মহলে উঠেছে প্রশ্ন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী শেখ ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত ও তাঁর কোন
ওয়ারিশ না থাকায় তাঁর প্রাপ্য সম্মানি ভাতা পাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাবলু হোসেন এই
জালিয়াতির অশ্রয় নেন। এবং সোনালি ব্যাংক বাগাতিপাড়া শাখা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন যে, বাবলু
হোসেন নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা উত্তোলন করেন।
ওই একই এলাকার বসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা (বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসর প্রাপ্ত অ্যাটেনডেন্ট) আনোয়ার
হোসেন (৭৫) জানান, তিনি এবং আয়ুব আলী ছোটবেলা থেকেই একই সাথেই লেখাপড়া
করেছেন।তাঁরা উভয়েই ভারতের মিত্রবাহিনীর অধিনে ট্রেনিং করেছিলেন। এবং ৭ নং সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধও
করেছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। আয়ুব আলীর মৃত্যুর
অনেক বছর পরে বাবলু হোসেন এর জন্ম হয়। আর বাবলু হোসেন আয়ুব আলীর ভাই তৈয়ব আলীর ছোট
ছেলে।
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা সুরুজ আলী (৭৫) জানান, আয়ুব আলী সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকায় মৃত্যু
বরণ করেন। আয়ুব আলী কোনো স্ত্রী, সন্তান ছিলেন না। তিনি ১৯৭৯ সালে মৃত্য বরণ করেন। মৃত্যুর
সময় তিনি আয়ুব আলীকে দাফন করার জন্য ওই সময় ঢাকায় যান। তিনি আরও জানান, বাবলু হোসেন
আয়ুব আলীর ভাতিজা । বাবলু হোসেন ভাতার লোভে পড়ে জাতীয় পরিচয় পত্র পরিবর্তন করেছেন বিষয়টি
এলাকার অনেকেই জানেন।
ওই একই এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার আক্কাস আলী ঘটনার সত্যাতা নিশ্চত করে বলেন, বাবলু হোসেন জাতীর
পরিচয় পত্রে তার পিতার নাম পরিবর্তন করেছেন।সেই সময় সংশোধনীর কাগজপত্র ডিজিটাল না হওয়ায়
হাতে লিখেই পাঠানো হতো।মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলীর কোনো স্ত্রী, সন্তান না থাকায়
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিস এর লোকজনের সুপারিশেই সংশোধনী কাগজপত্র পাঠানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে মোঃ বাবলু হোসেন বলেন, ছোট বেলায় তার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়ুব আলী শেখ তাকে
পালক পুত্র হিসেবে নেন। এবং তার প্রথম জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্মদাতা পিতার নাম তৈয়ব
আলী ভুল করে দিয়ে ফেলেন। পরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাÐারদের সঙ্গে পালক পুত্রের বিষয়টি কথা বলে তাদের
সহায়তায় পিতার নাম তৌয়ব আলী পরিবর্তে আয়ুব আলী শেখ নামে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করেন।
বাগাতিপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর ডেপুটি কমাÐার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান জানান, বাবলু
হোসেন এর বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। মোঃ বাবলু হোসেন জাতীয় পরিচয় যখন সংশোধন করেন
সেই সময় অজাদ হোসেন উপজেলা ডেপুটি কমাÐার এর দাযিত্বে ছিলেন। তিনিই সেই সময়
ভগিযোগী করে বাবলু হোসেন এর কাজপত্র সংশোধনে সাহায্য করেন।(সাবেক ডেপুটি কমাÐার)
আজাদ হোসেন আর মুক্তিযোদ্ধা নেই । ২০১৯ সালে তার নামের গেজেট বাতিল হয়। এবং ২০২৩ সালে তার
ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।
খারাপ,কথা বলতে পারছেন না। আর সেই সময় তিনি দিিয়ত্বে ছিলেন-না।
বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, এ বিষয়ে তিনি আবগত
না। কাগজপত্রাদি দেখে ব্যবস্থা ।নেবেন