নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগাতিপাড়াঃ
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমন মোকাবেলায় নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সরকারের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসকে সহযোগিতা করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “করোনা প্রতিরোধ কমিটি’’ (সপিসি)। মানুষকে সচেতন করতে সকাল থেকে সন্ধা রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। সংগঠনটি সম্পর্কে বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল কুমার রায় বর্তমান যুগের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই যুবকদেরকে আখ্যায়িত করেছেন।
জানা যায়, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজারে আসা মানুষদের সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে এবং বিনা কারণে বাজারে আড্ডা না দিয়ে বাড়ি থাকতে সচেতন করে চলেছে সিপিসি। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাড়ি ফেরা পরিবারকে হোম কোয়ারান্টাইন মানতে পরামর্শ প্রদান করছে তারা। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সংগঠনের খাদ্যসামগ্রী করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌছে দিতে সহযোগিতা করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিপিসি।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “করোনা প্রতিরোধ কমিটি’’ (সপিসি) এর আহ্বায়ক ও গণমাধ্যম কর্মী মিজানুর রহমান বলেন, প্রশাসনের জনবল কম থাকায় করোনা প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে হিমসিম খাচ্ছে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখে এবং করোনার ভয়াল থাবা থেকে সকলকে বাঁচাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “করোনা প্রতিরোধ কমিটি’’ (সপিসি)।
বর্তমানে বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রথম পর্যায়ে ৫২ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে। অনেকই করোনা মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবী হতে আগ্রহ প্রকাশ করায় ২য় ধাপে আরও ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী যুক্ত হবে। তবে উপজেলায় এই সংগঠনকে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পাল। সংগঠনটির আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের পরিচয় পত্রে স্বাক্ষর করে অনুমতি প্রদান করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল কুমার রায় বলেন, দেশের এমন পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধার মতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু যুবকদের ইউনিফর্ম পরে গলায় কার্ড ঝুলিয়ে হ্যান্ড মাইক হাতে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানুষকে করোনো থেকে সচেতন করছে। কাজটি যেমন ঝুঁকির তেমনি প্রসংশার দাবিদার। তাঁর মতে বর্তমান যুগের মুক্তিযোদ্ধা এই যুবকরা। তবে তাদের নুন্যতম স্বাস্থ্য উপকরন প্রদানে উপজেলা প্রশাসন এবং সামর্থবানদের এগিয়ে আসা জরুরী বলে তিনি মনে করেন।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন বলেন, সারা বিশ্বের মতো করোনার ভয়াবহতা আমাদের দেশেও লক্ষ্য করছি। করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে পুলিশের পাশে থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সিপিসি’ আমাদের সহযোগিতা করছে। এতে করে পুলিশ সদস্য কম থাকলেও সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে নিয়ে উপজেলাকে লকডাউনের আওতায় এনে সকলকে হোম কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করতে পারবে এমনটি আশাবাদী তিনি।