নিজস্ব প্রতিবেদক,বাগাতিপাড়া
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সেই মা মলি রানী ও মাসুমা ও তার-মেয়েকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খোদিজা বেগম শাপলা।
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর শুক্রবার সন্ধায় মিষ্টি ও ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হন তাদের বাড়িতে।
বুধবার ফল প্রকাশের পর বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া আলোচিত সেই মা মলি রাণী এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেন এবং উপজেলার উদ্যমী নারী মাসুমা খাতুন ও তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একসঙ্গে উত্তীর্ণ হন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত মা মলি রানী ও মা-মেয়ের কৃতিত্বের খবর নজরে এলে তাদের বাড়িতে স্বশরিরে হাজির হয়ে নিজ হাতে মিষ্টি খাইয়ে এবং ফুল দিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান।
এসময় তিনি মা মলি রানী ও মা মাসুমা এবং মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে নারী মুক্তির অংশ হিসেবে সকল বাধা বিপত্তিকে পিছনে ফেলে আরও সামনে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানান। এছাড়া তিনিও একজন নারী হিসেবে সকল প্রয়োজনে পাশে থেকে নিজের সাধ্যমত সহযোগীতার আশ্বাষ দেন খোদিজা বেগম শাপলা।
উল্লেখ্য, মলি রানী যখন নবম শ্রেণির ছাত্রী তখন তার বাবা বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবব্রত কুমার মিন্টুর সঙ্গে বিয়ে দেন। এরপর আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। সংসারের চাপে পিষ্ট হয়ে গৃহিণীই রয়ে যান। এরই মধ্যে দুটি সন্তানের জন্ম দেন। ছেলেদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তার নিজের পড়ালেখা জানা দরকার। সেই ভাবনা থেকেই বড় ছেলে মৃন্ময় কুমার কু-ুর সাথে স্কুলে ভর্তি হন মলি রাণী । এর পর ছেলের সাথে এসএসসি পাশের পর এবার এইচএসসি পাশ করেন মা মলি রানী।
অপর দিকে, অল্প বয়সে বিয়ের কারনে পড়া-লেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে ভেতরের লুকানো ইচ্ছাকে পুরণের জন্য মেয়ের সাথে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলেন মাসুমা। এরপর মেয়ের সাথেই এসএসসি পাসের পর এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হন মাসুমা খাতুন। তিনি পেয়েছেন ৪.১৩ এবং মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস পান জিপিএ-৫। মাসুমা খাতুন বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরের আব্দুল মজিদের স্ত্রী।