নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগাতিপাড়া:
নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলা বাজারে নৈশপ্রহরীদের বেঁধে রেখে ১১টি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব দোকানের বেশিরভাগই ছিল রড, সিমেন্ট, মোবাইলের ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ এজেন্টের দোকান। তবে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা পরিদর্শন করলেও এখনও ডাকাত দলের সদস্যদের আটক করতে পারেননি তারা। বুধবার শেষ রাতেরদিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান বাজারে থাকা নৈশপ্রহরীরা।
সরেজমিনে জানা যায়, একযোগে এমন ডাকাতির ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত এবং দুধর্ষ বলেছেন স্থানীয়রা। আইন-শৃংখলার ও দায়িত্বরতদের অবহেলার কারণে এসব ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতি হওয়া এসব দোকান গুলো তমালতলা বাজারের পাশে বয়ে যাওয়া বড়াল নদীর পাড়ঘেষে অবস্থিত। দোকানের সাঁটারে ঝোলানো তালা শক্ত কিছু দিয়ে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে নগদ অর্থ, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতরা। প্রত্যেকটি দোকানে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি তাদের।
ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিক ও নৈশপ্রহরীরা জানায়, ১৫ থেকে ২০জনের একটি ডাকাত দল বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে তমালতলা ব্রীজের দিক থেকে বাজারে আসে। তারা প্রথমেই তিন নৈশ্যপ্রহরী মাজেদুর রহমান, ওমর আলী ও আবুল কালামের হাত পা বেঁধে পাশের লিচু বাগানে আটকে রাখে। পরে রাস্তার দুই পাশের ১১টি দোকানে তালা ভেঙ্গে নগদ ও টাকা মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা নয়নের রড, সিমেন্ট ও টিনের দোকান ফুয়াদ ট্রেডার্স থেকে এক লাখ সাড়ে ১২হাজার, ব্যবসায়ী সুইটের রেজোয়ান ইলেকট্রনিক্স থেকে এক লাখ ৬০হাজার টাকা ও মোবাইল, শিফাত সু ষ্টোর থেকে ৫৯ হাজার, সজিব ষ্টোরে ৫৫ হাজারসহ, ব্রাদার্স ফার্মেসী ও রোগ মুক্তি ফার্মেসী, সিটু ষ্টোর, সরকার ষ্টোর, শিমুল এগ্রো এন্টাপ্রাইজ, আলিফ ইলেকট্রনিক্স এন্ড হার্ডওয়্যাস এবং সিদ্দিক ষ্টোরের তালা ভেঙ্গে কয়েক লাখ নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে বাজার কমিটির সভাপতি কাওসার আলী বলেন, একই বাজারে এক যোগে এতোগুলো দোকানে এমন ডাকাতির ঘটনায় আতংকৃত। কোন সংঘ বদ্ধ চক্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এমন দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশাসন তৎপর না হলে ভবিষ্যতে তারা এরথেকে বড় ডাকাতির আশংকা তার।
এমন ঘটনার ভুক্তভুগী বিহারকোল বাজারের অলংকার জুয়েলার্সের ওর্নার ধ্রুব কুমার কুন্ডু বলেন, আমার বাড়িতে ২০০৩ সালে ডাকাতি হয় কিন্তু কোনো বিচার পাইনি। পর পর দুইবার নাইটগার্ডকে বেধেঁ আমার দোকানে আবার ডাকাতি হয় তারও কোনো বিচার হয়নি। তারপরে ২০১৪ সালে আবারও দোকানের ওয়াল ভেঙ্গে চুরি করে। এসবের কোনো সুরোহা না হওয়াতেই বাগাতিপাড়ার বিভিন্ন বাজারে এরূপ ঘটনা ঘটেই চলেছে।
তমালতলা বাজারে বঙ্গবন্ধুর মুর্যালে পাহারারত পুলিশ সদস্য ও টহলরত টিম থাকার পরও এমন ডাকাতির ঘটনা কিভাবে ঘটলো জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি নাজমুল হক কোনো স্বদউত্তর না দিয়ে প্রসঙ্গ এড়ানোর চেষ্টাই বলেন, মামলা না হলেও ইতোমধ্যে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবো।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ডাকাতি হওয়া স্থান গুলো পরিদর্শন ও নৈশপ্রহরীদের সাথে কথা বলে জানান, বিষয়টি পরিকল্পিত ও দুঃখ জনক। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত আমি তাদের কে গ্রেফতার করে আপনাদের সামনে দিয়ে নিয়ে যাবো। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি আমার নিজস্ব টিম কাজ করবে। খোঁয়া যাওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আরও বলেন, আমাদের সহযোগীতা করুন এবং আস্থা রাখুন।