নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগাতিপাড়া:
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সুদ ও দাদন ব্যবসা জমজমাট ভাবেই চলছে। এক শ্রেণীর বিত্তশালী ব্যক্তিদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে গ্রামের গরিব দুঃখী ও অসহায় সাধারন মানুষ। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার পেড়াবাড়ীয়া, সোনাপাতিল, ছাতিয়ানতলা, বিহাড়কোল, গালিমপুর গ্রামগুলো অন্যতম।
এছাড়াও আরো অনেক গ্রামে সুদ ও দাদন ব্যবসায়ীরা খুবই তৎপর হয়ে উঠেছে। এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মহাজন ও ব্যবসায়ীরা বাৎসরিক, মাসিক, সাপ্তাহিক এমনকি দৈনিক ভিত্তিতে নগদ ঋণ দিয়ে দেড় থেকে দুই গুণ মুনাফা লাভ করছে। অপরদিকে, গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিরাট অংশ বেঁচে থাকার তাগিদে চড়া সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ দিন দিন গরিব ও ভূমিহীনে পরিণত হচ্ছে আর মহাজনরা অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। সুদের টাকা নিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। অথচ, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসছে না। দাদন ব্যবসায়ীদের সুদ কারবারের ফাঁদে পড়ে বাগাতিপাড়ার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে। দারিদ্রতা ও অসহায়ত্বের সুযোগে সাদা চেকে সইসহ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে জমির দলিল। চেকে ইচ্ছামত টাকার সংখ্যা বসিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানিসহ চলে নানাভাবে নির্যাতন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ এবং আমাদের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে এমনই কিছু সুদ ব্যবসায়ীর নাম। সুদ ব্যবসাকে যদি বৈধতা বা শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হতো তবে তারাই হতেন এ শিল্পের নিপুন কারিগর বা সফল ব্যক্তি । সোনাপাতিল গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম রাজা ও আল মামুন সহ রয়েছে আরও অনেকে এই ব্যবসার সঙ্গে। তবে তারাই এলাকার বড় সুদ ব্যবসায়ী বলে পরিচিত। এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া উপজেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল বলেন, মধ্যযুগ কিংবা সামন্তযুগ, সব সময়েই মহাজনী ব্যবসা বেশ জোরেশোরে চলছিল। কিন্তু সভ্যতার ক্রম বিকাশের যুগে এসে ওই প্রবণতার পথ রুদ্ধ হলেও অতি সম্প্রতি বাগাতিপাড়ায় মহাজনী ব্যবসা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আর মহাজনদের চড়া সুদের গ্যাড়াকলে পড়ে সাধারন মানুষ থেকে উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত সকলেই হয়ে যাচ্ছে সর্বশান্ত। এ ব্যাপারে খুব দ্রুত প্রশাসনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। উপজেলার সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা কর্মচারীরাও এসব দাদন ব্যবসায়ীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। পুরো বইয়ের চেক স্বাক্ষর করে দাদন ব্যবসায়ীকে দিতে বাধ্য হয়েছে। অনেকে আবার টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে নাটোর জেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সোহেল রানা বলেন, অসাধু দাদন দাতাদের হয়রানির শিকার হয়ে মানুষ মানষিক ভাড়সাম্য হারিয়ে ভিটামাটি ছারা হচ্ছেন। এমনকি আত্মহত্যার মতও পথ বেছে নিচ্ছেন। ৫০% চেকের (এন,আই এ্যাক্ট) মামলার ওয়ারেন্ট ইস্যু হচ্ছে। টাকা নেবার সময় ব্লান্ক চেক প্রদান করে সুদারুদের চাহিদামত দিতে না পারায় দাদন দাতারা ইচ্ছে মত টাকার অংক বসিয়ে নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, লাখে ২০ হাজার বা তার বেশি সুদে টাকা দেয়া নেয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি আহ্ববান জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, সুদ ব্যবসা অবশ্যই সমাজের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের কাছে এরকম ভুক্তভোগী কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …